অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ঢাবিতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:০৮ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিরুদ্ধে অব্যাহত অপপ্রচারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। শনিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে এ বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনের
সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সিনিয়র সহ-সভাপতি
মো. মাসুম বিল্লাহ, সহ-সভাপতি আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক
মো. নাসির উদ্দিন শাওন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নূর আলম ভূঁইয়া ইমন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের
টিএসসি সংলগ্ন ডাস (DUS) চত্ত্বর থেকে শুরু হয়ে ভিসি চত্ত্বর হয়ে রাজু ভাস্কর্যের
সামনে গিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।
সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, কিছু কুচক্রী মহল, কিছু বাহিনী শুধু
বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দলের উপর দিয়ে নয়, তার সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে
নিয়েও ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে। ছাত্রদল বাংলাদেশের
প্রশ্নে সবসময় আপোষহীন। সেই দলকে রুখে দেওয়ার জন্য এমন কোনো শক্তি বাংলাদেশে মাটিতে
জন্ম নেয়নি। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আমি আজকে যেখানে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছি সেই
রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে দাঁড়িয়ে নামে বেনামে একের পর এক মব কালচার তৈরি করে সাধারণ
শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। বিগত ২রা জানুয়ারি আপনারা দেখেছেন সিন্ডিকেটের
সভাকে কেন্দ্র করে এক প্রকার অসাধু ছাত্র স্বৈরাচারের দোসর, ১৯৭১ সালে পরাজিত শক্তি,
২৪ এর পরাজিত শক্তি মিলে এক প্রকার অপপ্রচার চালিয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় সংগঠন
ছাত্রদলের ভূমিকাকে ক্ষুন্ন করার জন্য রাতের আঁধারে একটি মব ক্রিয়েট করে। বাংলাদেশের
সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। কিন্তু আমরা কী দেখলাম
আমাদের মাননীয় প্রক্টর মহোদয় তার বক্তব্যে বলেছেন, ঐদিন হেনস্তার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।
তিনি আরও বলেন, আমি ভিসি মহোদয়, প্রক্টর মহোদয়কে উদ্দেশ করে বলে দিতে
চাই আপনারা যদি চান এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গণতান্ত্রিক উপায়ে তাদের মতামত
ব্যক্ত করবে তাহলে ছত্রদল আপনাদেরকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে। আমরা যদি কোনোভাবে বুঝতে
পারি প্রিয় ভিসি ও প্রক্টর স্যার আপনারা মব ক্রিয়েটের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তাহলে
আমার পক্ষ থেকে আপনাদের প্রতি হুঁশিয়ারি জ্ঞাপন করছি।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি পাঁচ আগস্টের বাংলাদেশে
বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করার একটি পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সংবাদপত্রের প্রতিটি ভাই এবং
বোনেরা আমাদের সব সময় সহযোগিতা করবেন। আপনাদের সহযোগিতা পেলে প্রতিটা ক্যাম্পাসে আমরা
এমনভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করব যাতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আমাদের দেখে বাহবা দিতে বাধ্য
হবে।
সাধারণ সম্পাদক বলেন, যে সকল মুনাফিক সংগঠন ছাত্রদলকে নিয়ে মিথ্যা প্রচারে
লিপ্ত। তাদেরকে আমরা হুঁশিয়ারি করে দিতে চাই। আর যদি কোনো প্রচার করা হয় তাহলে ভালো
হবে না। ছাত্রদল কারও রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করতে ভয় করে না। সুতরাং তাদেরকে আমরা সাবধান
করে দিতে চাই।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, পতিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে বাংলাদেশের
শিক্ষার্থীদের আস্থাভাজন সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল নিরন্তর অকুতোভয় অবস্থান
নিয়ে নেতৃত্ব ও আত্মত্যাগের দিক দিয়ে সর্বোচ্চ অবদান রেখেছে। এ কারণে বিগত ১৫ বছরের
ফ্যাসিবাদী শাসনামলে গুম—খুনের শিকার হয়েছেন কয়েক শতাধিক ছাত্রদল নেতাকর্মী। তবু
২০২৪ সালের গণ—অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দেশব্যাপী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের
নেতাকর্মীদের নামে সম্প্রতি ডাকসু নির্বাচন, সিনেট ভবনে উপাচার্য ও প্রক্টরের সঙ্গে
শিক্ষার্থীদের আলাপ ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণঅধিকার পরিষদের নেতা ফারুক হাসানের
উপরে হামলাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কিছু কিছু সংবাদমাধ্যম যাচাই বাছাই ব্যতিরেকেই সংবাদ
পরিবেশন করছে, এবং সেগুলোকে ভিত্তি করে অব্যাহতভাবে ভিত্তিহীন, অসত্য ও মনগড়া গুজব
ও অপপ্রচারের ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে কুচক্রী একটি মহল।
তারা আরও বলেন, ২০২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানের একক ইজারা কেউ দাবি করলে সেটা
মেনে নেওয়া হবে না। ১৯৭১-এর পরাজিত শক্তি ও ২০২৪-এর পরাজিত শক্তির মিলিত মব কালচারকে
প্রতিহত করে বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার আদায়ের সংগ্রাম চলবেই।
