আওয়ামী লীগের কাউকে দলে নেওয়া যাবে না: আমির খসরু
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৫, ০৪:০০ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সামাজিকভাবে অগ্রহণযোগ্য, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিকে বিএনপিতে নেওয়া যাবে না। যাদের কারণে আমাদের ভোট কমে যাবে। আবার আওয়ামী লীগের কাউকে দলে নেওয়া যাবে না। যারা আমাদের সঙ্গে হাঁটলে ভোট কমে যাবে, এ ধরনের লোক, ব্যক্তিদের যথাসম্ভব দূরে রাখবেন।
শনিবার দুপুরে নগরীর কাজীর দেউরির নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ের মাঠে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির উদ্যোগে বিএনপির সদস্য ফরম বিতরণ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিন নিজের সদস্য ফরম নবায়ন করে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন আমির খসরু। একই সঙ্গে বিভিন্ন জেলা বিএনপির নেতাদের সদস্য ফরমের বই বিতরণ করেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীমের সভাপতিত্বে এবং সহসাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের পরিচালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, দলের যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কোষাধ্যক্ষ ও সদস্য ফরম নবায়ন কমিটির সদস্য সচিব এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি হারুনুর রশীদ হারুন।
আমির খসরু আরও বলেন, আপনারা হচ্ছেন প্রতিটি এলাকার ‘নোঙর’। মানে যেভাবে নোঙর জাহাজ ধরে রাখে। আপনারা বিএনপির জাহাজটাকে ধরে রাখবেন। তাই আপনাদের কাজটা সঠিকভাবে করতে হবে। এটার ওপর নির্ভর করছে আগামী দিনে বিএনপির রাজনীতি, এগিয়ে যাওয়া, নির্বাচন, বাংলাদেশ গড়া। অনেক বড় দায়িত্ব কিন্তু। সবাই কষ্ট করে এ দায়িত্বটা যথাযথভাবে পালন করবেন।
তিনি বলেন, ১০-১৫ বছর ধরে বিএনপি সাংগঠনিক কার্যক্রম সঠিকভাবে পালন করতে পারেনি। কারও বাড়িতেও যদি একটা অনুষ্ঠান বা আলোচনা হয়েছে, সেখানেও গোয়েন্দা বিভাগের লোকজন উপস্থিত হতো। দীর্ঘ ১৫ বছর বিএনপির মতো একটি বিশাল দল রাজনৈতিক সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। যারা গতবার মেম্বারশিপের জন্য বই নিয়ে গেছেন, তারা ওই বই নিয়ে বের হতে পারেননি। তাদের কাজ করতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু আজ প্রেক্ষাপট ভিন্ন। তাই নতুন মেম্বারশিপের যে কার্যক্রম, সেটাকে পরিপূর্ণভাবে পালন করতে হবে।
আমির খসরু বলেন, আজ আমাদের জন্য অনেক বড় সুযোগ এসেছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বৃহত্তম দল। এটিকে সাংগঠনিক রাজনৈতিকভাবে আরও শক্তিশালী করতে হবে। দল তো শক্তিশালী আছে, শেখ হাসিনাকে বিতাড়িত করেছে, সব ঠিক আছে। কিন্তু আমাদের সাংগঠনিক যে শক্তি, স্পিরিট বা ভিত্তি, সেটা এখন আমাদের করতে হবে। এর জন্যই আজ এ উদ্যোগ। আমরা তো চাইলে মোবাইল ফোনেও করতে পারতাম। এ মেম্বারশিপ করতে গিয়ে আমরা চেষ্টা করব বৃহত্তর অংশকে আমাদের মেম্বারশিপের আওতায় নিয়ে আসার জন্য। কারণ, এটা দেশের বৃহত্তর দল, তাই দেশের বৃহত্তর অংশ যাতে বিএনপির সদস্য হয়। এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে।
আমির খসরু বলেন, এ মেম্বারশিপ দিনের আলোয় করতে হবে, অন্ধকারে নয়। দিনের আলোয় আজ আমরা এখানে করছি, আপনারাও প্রতিটি শহর, থানা, ইউনিয়নে এ ধরনের মেম্বার করবেন। যারা বিএনপির সদস্য হবে, আমরা চাই তারা দিনের আলোতেই হোক। এখানে কোনো লুকোচুরি নেই। একদিকে পুরুষের লাইন থাকবে, আরেকদিকে নারীর লাইন থাকবে, যেভাবে ভোটার হয়। এটা দৃশ্যমান হতে হবে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিতে হবে। এটাও একটা আন্দোলন। শুধু মেম্বারশিপ না। এটাকে আন্দোলন হিসাবেই নিতে হবে। আর আমাদের কথাগুলো মানুষের কাছে যেতে হবে।
বাংলাদেশের মানুষের নতুন দেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বিতাড়িত হয়েছে। আগামী দিনে দেশের মানুষের নতুন দেশ গড়ার স্বপ্ন। মানুষ, নতুন প্রজন্ম কী চাচ্ছে, তারা চাচ্ছে দেশটা গড়তে হবে। দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকতে হবে। যে গণতান্ত্রিক পরিবেশে সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করতে পারবে। দেশে একটা অর্থনৈতিক ব্যবস্থা থাকতে হবে। যে অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করতে পারবে।
শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, আগামী দিনে যারা প্রতিযোগিতায় আসতে চায়, তারা বিএনপির সঙ্গে পারবে না। বিএনপি অভিজ্ঞতাসম্পন্ন দল। কোনো ষড়যন্ত্র দলের অগ্রযাত্রার পথে বাধা হতে পারবে না। আমরা চাই একদিকে সংস্কার হবে, একদিকে ভোট হবে এবং আরেকদিকে আওয়ামী লীগের বিচার হবে।
এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তরিকুল আলম তেনজিং।
উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, বান্দরবান জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাচিং প্রু জেরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়া, লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শাহাবুদ্দিন সাবু, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শামসুল আলম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এমএ হালিম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন, নোয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হারুনুর রশীদ আজাদ, ফেনী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দীন আলাল, রাঙামাটি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ মামুন, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমএন আবসার, নোয়াখালী জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এবিএম জাকারিয়া প্রমুখ।
