Logo
Logo
×

বাজেট

কর্মমুখী শিক্ষায় বেশি অগ্রাধিকার

শিক্ষায় গতানুগতিক বাজেট ধরা হয়েছে -ড. মনজুর আহমেদ

Icon

হুমায়ুন কবির

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কর্মমুখী শিক্ষায় বেশি অগ্রাধিকার

আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম-গতানুগতিক শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলন। এজন্য কারিগরি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত শিক্ষায় জোর দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যুব কর্মসংস্থানকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এসব শিক্ষার প্রসারে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বাজেটে। এবার শিক্ষায় মোট বাজেটের ১৪ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে। 

বাজেট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাজেটের আকার ধরা হয় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এতে শিক্ষা খাতে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৯৫ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের ১৪ শতাংশ। গত অর্থবছরে শিক্ষায় প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ ছিল ৯৪ হাজার ৭১০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে ৯৩৫ কোটি টাকা।

আগামী অর্থবছরে আধুনিক শিক্ষার লক্ষ্যে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিডিং কর্মসূচি’র জন্য ২ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সংশোধিত পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের মাঝে সরবরাহের লক্ষ্যে বরাদ্দ ১ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বোনাস বৃদ্ধি এবং গ্রাচ্যুইটি প্রদানসহ সব স্তরের শিক্ষকদের মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। বর্তমানে কারিগরি শিক্ষায় এনরোলমেন্টের হার ১৯ শতাংশ। ২০২৫ সালের মধ্যে এটি ২০ শতাংশে উন্নীত করতে প্রতিটি বিভাগীয় পর্যায়ে মহিলা পলিটেকনিক ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, জেলা পর্যায়ে পলিটেকনিক এবং উপজেলা পর্যায়ে টেকনিক্যাল স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে ১ হাজার ১৩৫টি মাদ্রাসা ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে এবং ৫১৩টি বহুতল ভবনের কাজ চলমান রয়েছে। ৪৯৩টি মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া ইবতেদায়ি পর্যায়ে বৃত্তি প্রদান এবং মাদ্রাসাগুলো এমপিওভুক্তি বাবদ ৭২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। সোমবার বিকালে বাজেট বক্তব্যে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য জানান।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. মনজুর আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, কর্মমুখী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত শিক্ষায় যেভাবে অগ্রধিকার দেওয়া হয়েছে, সেভাবে বরাদ্দ বাড়েনি। এটা গতানুগতিক বাজেট বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা : প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যার মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের জন্য পড়াশোনার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি ও মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদান। প্রাথমিক শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে চলতি অর্থবছরে সারা দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ৫ হাজার ৯৪৬টি শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ, ১৭ হাজার ১৬৪টি ওয়াশব্লক নির্মাণ, ৪ হাজার ৪৫০টি টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া চলতি শিক্ষাবর্ষে প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ৯ কোটি ১৯ লাখ ৫০ হাজার ৪৯২টি বই বিতরণ করা হয়েছে। প্রাথমিক স্তরে শতভাগ শিক্ষার্থীকে ইএফটির মাধ্যমে উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষার গুরুত্ব বিবেচনায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এ খাতে ৩৫ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। গত অর্থবছর (২০২৪-২৫) এ খাতে প্রস্তাবিত বরাদ্দ ছিল ৩৮ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে বরাদ্দ কমেছে ৩ হাজার ৪১৬ কোটি টাকা।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা : উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী, আধুনিক ও বিশ্বমানে উন্নীত করার লক্ষ্যে সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আন্তর্জাতিক মানের আউটকাম বেইসড এডুকেশন পদ্ধতিতে কারিকুলাম হালনাগাদ করা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আওতায় ৬২টি প্রকল্পের মাধ্যমে ১ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে শিক্ষা অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া চলতি অর্থবছরে মাধ্যমিক পর্যায়ে ৫১ লাখ, উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ৮ লক্ষ এবং স্নাতক পর্যায়ে ১ লাখ ৬৫ হাজার অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষায় মোট ৪৭ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। 

কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা : কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১২ হাজার ৬৭৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ১১ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা।


ঘটনাপ্রবাহ: বাজেট ২০২৫-২০২৬


আরও পড়ুন

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম