ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুরের ওপর হামলা চালিয়ে তার দুই আঙুল ভেঙে দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা।

মঙ্গলবার রাজু ভাস্কর্যে প্রতিবাদ সমাবেশ করতে গেলে সেখানে ভিপি ও তার সাথীদের ওপর হামলা চালায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের একটি সংগঠন।

ভিপি নুরের ওপর মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ওই হামলার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু করার নেই বলে বক্তব্য এসেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, এ হামলার দায়-দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে ভিপি নুরের ওপরই বর্তায়। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু করার নেই।

এক গণমাধ্যমকে ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক ড এ কে এম গোলাম রব্বানী আরও বলেন, ‘ রাজু ভাস্কর্যে প্রতিবাদ সমাবেশ করা অন্তত ভিপি নুরুল হক নুর থেকে আশা করা যায় না। কারণ এখানে কাউকে কোনদিন প্রোগ্রাম করার অনুমিত দেয়া হয়নি। এখানে প্রোগ্রাম করা নিষেধ। এটা জেনেও ভিপি নুর কিভাবে এখানে এমন আয়োজন করে।  তাই তার ওপর হামলার দায় দায়িত্ব তার নিজেরই। নুরের কাছে আমরা অনেক বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা আশা করি।’

তবে এ হামলার বিরোধীতাও করেন ঢাবি প্রক্টর। তিনি বলেন, যারা হামলা চালিয়েছে তারাও কাজটা সঠিক করেনি।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংহতি সমাবেশ ও মিছিলের ডাক দেয় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।

পূর্বঘোষিত সংহতি সমাবেশে নেতৃত্ব দেন ভিপি নুরুল হক নুর।  ভারতের বিতর্কিত ও সাম্প্রদায়িক বিভেদের নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত ভারতীয়দের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সংহতি সমাবেশটির আয়োজন করা হয়।

কিন্তু সমাবেশের নির্ধারিত সময়ের আগেই সেখানে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন।

আন্দোলনকারীরা বিকাল ৪টার দিকে রাজু ভাস্কর্যে আসলে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের সভাপতি ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল এবং মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সাবেক মুক্তিযুদ্ধ এবং গবেষণাবিষয়ক উপ-সম্পাদক আল মামুন দলবল নিয়ে ডাকসু ভিপিসহ আন্দোলনকারীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন। হামলায় নুরের দু’টি আঙুল ভেঙে যায় বলে জানান আন্দোলনকারীরা।

হামলায় আহতরা জানান, ‘বাংলাদেশে বসে ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলা যাবে না’ বলে হামলা চালান ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।

এমন অভিযোগের বিষয়ে বুলবুল বলেন, ডাকসুর ভোটার হিসেবে আমরা সেখানে গিয়েছি। আমরা ভিপিকে জিজ্ঞেস করেছি, তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া বহির্বিশ্বের কোনো বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারেন কিনা? এটা তার এখতিয়ারে পরে কিনা। এটা শুনেই তারা ক্ষিপ্ত হয়, আমাকে ভারতের দালাল বলে। পরে মারামারি হয়।

আহত ভিপি নুর বলেন, আমরা দেশের স্বার্থবিরোধী আর কোনো সিদ্ধান্ত নিতে দেব না। বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির কারণ এই স্বৈরাচার সরকার। হামলায় আহত আখতার হোসেন সমাবেশের সামনে বসে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ভারতের আধিপত্য কায়েম হতে দেব না। সরকারের নীরব ভূমিকার জন্য দেশ আজ অন্যের হাতে।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরকে যেখানে পাবে সেখানেই প্রতিহত করবে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।