‘আস্থাহীনতা কোভিড পরবর্তী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বাধাগ্রস্ত করবে’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২০, ০৪:১৫ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
‘ভবিষ্যত পুনর্গঠনে মহামারী পরবর্তী বিশ্বে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের ভূমিকা’ শীর্ষক একটি ওয়েবিনারের বক্তারা বলেছেন, রাষ্ট্র ও নাগরিক সমাজের মধ্যে আস্থাহীনতা কোভিড পরবর্তী বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বাধাগ্রস্ত করবে।
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ওয়েবিনারে বক্তারা কোভিড-১৯ পরবর্তী বিশ্বে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চ্যালেন্জগুলো মোকাবেলায় এখনই যথাযথ দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণের কথা বলেন। কেননা কোভিড-১৯ ভঙ্গুর স্বাস্থ ব্যবস্থা, দারিদ্র, অর্থনৈতিক ও লিঙ্গ অসমতাসহ আরো নানামুখী সমস্যার জন্ম দিচ্ছে, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিশেষ চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসছে। আর তা্ই কোভিড পরবর্তী সময়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে রাষ্ট্র ও নাগরিক সমাজের মধ্যে যেন আস্থাহীনতা তৈরি না হয় সেদিকে বক্তারা বিশেষ নজর দিতে বলেন।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ ও অস্ট্রেলিয়ার সানসাইন কোস্ট বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে। সেন্টার ফর পিস স্টাডিজের পরামর্শক ড. ক্যাথরিন লির বক্তব্যের মাধ্যমে ওয়েবিনারের সুচনা হয়।
বক্তারা নতুন করে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন ও সংস্কারের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে জাতীয় পরিকল্পনার একটি অংশ হিসেবে বিবেচনা করে কোভিড পরবর্তী অবস্থায় দ্রুত পদক্ষেপ নেবার কথা বলেন।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য বলেন, আমাদের সামগ্রিক সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে এবং প্রবৃদ্ধি ঠিক রেখেই কোভিড পরবর্তী সমস্যাগুলোকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার আলোকে পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি সমাজের সকল স্তরের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য একযোগে সমন্বিত প্রচেষ্টা নেবার কথা বলেন।
ইউএনডিপির বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জী সামাজিক সুরক্ষার উপর জোর দিয়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করতে বলেন। তিনি আরো বলেন, কোভিড পরবর্তী সময়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে উন্নয়ন কার্যক্রম হতে হবে পরিবেশ বান্ধব, অন্তর্ভক্তিমূলক ও পক্ষপাতশূন্য।
কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ক্ষেত্রে গ্রিফিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. তপন সরকার বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবেলায় বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী ও সহযোগিতাভিত্তিক পদক্ষেপ নিতে হবে যেন স্বাস্থ্য খাতের পাশাপাশি দারিদ্র, অসমতা ও শিক্ষাখাতের চ্যালেন্জগুলো সঠিকভাবে মোকাবেলা করতে পারে।
এ প্রসঙ্গে এসআইপিজির পরামর্শক অধ্যাপক সালাহউদ্দিন এম আমিনুজ্জামান বলেন, কোভিড-১৯ আমাদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী বিভিন্ন সংস্থার উপর জনমনের ভরসার অভাবকে প্রকটভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। যে কারণে কোভিড পরবর্তী বাংলাদেশের জন্য টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে স্বাস্থ্য খাতকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর কোনো বিকল্প নেই।
অস্ট্রেলিয়ার সানসাইন কোস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো ড. শরীফ আহমেদ মুকুল বলেন, কোভিড পরবর্তী নানাবিধ সমস্যা নিয়ে কাজ করার সময় পরিবেশবান্ধব কার্যক্রমের উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইন্সটিটিউট অফ পলিসি অ্যান্ড গর্ভনেন্সের (এসআইপিজি) জ্যেষ্ঠ ফেলো শহীদুল হক বলেন, জনগণের দাবি ও স্বার্থকে সামনে রেখে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে নতুনভাবে বিবেচনায় আনতে হবে। প্রয়োজনে নতুন করে বৈশ্বিক ডায়ালগ তৈরির প্রচেষ্টা হাতে নিতে হবে।
সমাপনী বক্তব্যে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বলেন, কোভিড-১৯ নানারকম সমস্যা নিয়ে আসছে, একজন শিক্ষাবিদ হিসেবে তিনি একটি বিশাল অংশের ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা বিষয়ক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত হওয়ার প্রতি জোর দেন। তিনি ছাত্রছাত্রীদের নৈতিক শিক্ষার উপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন।
ড. বুলবুল সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইন্সটিটিউট অফ পলিসি অ্যান্ড গর্ভনেন্সের পরিচালক অধ্যাপক শেখ তৌফিক এম হক, সিপিএ এর সমন্বয়ক ড. এম জসিম উদ্দিনসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, পেশাজীবী ও বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।
