যৌন হয়রানির অভিযোগে জাবি শিক্ষক অপসারণ
জাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০২:৩৩ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নিজ বিভাগের ছাত্রীর দেওয়া যৌন হয়রানির অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সানওয়ার সিরাজকে অপসারণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও সিন্ডিকেটের সদস্য সচিব রহিমা কানিজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের নিয়মিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এদিকে এ বহিষ্কারকে প্রতিহিংসাপরায়ন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অপসারিত শিক্ষক সানওয়ার সিরাজ। বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত অধ্যাপক মামুন আকন্দ চাকরি ফিরে পেতে তার কথিত স্ত্রীকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে এ ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগ দায়ের করেছে। মূলত ওই ছাত্রীর অভিযোগ ছিল, আমি তাকে পরীক্ষায় নম্বর কম দিয়েছি। এজন্য সে তার বন্ধুদের কাছে বলেছে- সে আমাকে দেখে নেবে। আমার প্রতি ছাত্রীর এই ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে মামুন আকন্দ তার উদ্দেশ্য হাসিল করতে চেয়েছেন।
তিনি বলেন, ওই ছাত্রী ২০১৮ সালের বিভিন্ন সময়ে তার ফেসবুক আইডি ও বিভিন্ন ফেক আইডি দিয়ে আমার সহজ-সরল স্ত্রীকে বলে আমার স্ত্রীর যেহেতু সন্তান হয় না, সেহেতু আমি অন্য মেয়েদের সঙ্গে নাকি প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলছি। এসব বলে আমার পরিবারের মাঝে অসন্তোষ সৃষ্টি করে। আমার স্ত্রীকে দিয়ে বিভিন্ন শিক্ষক ও উপাচার্যের কাছে অভিযোগ দায়ের করাতে চায়। সেসব প্রমাণ আমার কাছে আছে। কিছুদিন পর আমার স্ত্রী যখন বুঝতে পারে সে একটি ফাঁদে পা দিয়েছে, তখন সে ফিরে আসে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া অভিযোগকারী যেসব কল রেকর্ডিং এবং ফেসবুক মেসেঞ্জারের স্ক্রিনশট সেলের কাছে মেইলের মাধ্যমে জমা দিয়েছে তা বিকৃত করে উপস্থাপন করেছে। প্রথমত, দীর্ঘ ফোন কলের রেকর্ড কেটে জোড়া লাগিয়ে বিকৃত করে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। সেসব কল রেকর্ডিংয়ের সম্পূর্ণটা আমার কাছে রয়েছে। সেই কল রেকর্ডিংগুলো আমি সেলে জমা দিতে চাইলেও সেল তা গ্রহণ করেনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এ মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ নিয়ে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের প্রধান আমার বিরুদ্ধে এক পাক্ষিক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। আমি বিভিন্ন সময় এ মিথ্যা অভিযোগের বিরুদ্ধে নানা ডকুমেন্টস উপস্থাপন করতে চাই। কিন্তু সেল তা গ্রহণ না করেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
এর আগে ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সানওয়ার সিরাজের বিরুদ্ধে বিভাগের সভাপতি বরাবর যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী।
বিভাগের সভাপতি অভিযোগটি তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলে পাঠান। সেলের সুপারিশে উপাচার্য একই বছর ৩০ সেপ্টেম্বর সানওয়ারকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন।
