আড়াই লাখে ইবিতে ভর্তির প্রলোভন, আটক ১
ইবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৪:৫২ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) জালিয়াতি করে শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগে জালিয়াতি চক্রের এক সদস্যকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতিসৌধ এলাকা থেকে তাকে আটক করে ইবি থানায় সোপর্দ করে ডিবি পুলিশ।
আটক হওয়া আতিকের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার রাণীনগর গ্রামে। তার পিতার নাম আবু বকর। তিনি স্থানীয় একটি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র বলে জানা গেছে।
প্রতারণার মাধ্যমে আড়াই লাখ টাকা চুক্তি হয় ঠাকুরগাঁওয়ের গোবিন্দনগরের মোকাররম হোসেনের ছেলে আহনাফ মোরশেদের সঙ্গে। তাকে রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত ভুয়া একটি তালিকা দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে তার থেকে প্রথম দফায় ১৮ হাজার টাকা লেনদেনও করেন ভুক্তভোগী। দ্বিতীয় দফায় আবারো টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ক্যাম্পাসে ডেকে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক করিয়ে দেন ভুক্তভোগী মোরশেদ।
ভুক্তভোগীর মামলার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি যুগান্তরকে বলেন, লালচাঁন ও আটক হওয়া আতিকের বিরুদ্ধে ভিকটিমের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আসামি করে মামলা হয়েছে। সোমবার আটক ব্যক্তিকে কুষ্টিয়া কোর্টে চালান করা হবে। লালচাঁনকে আটকের চেষ্টা চলছে।
জানা যায়, লালচাঁনের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বেও বিভিন্ন সময় ইবির ভর্তি বাণিজ্য ও ভর্তি জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে।
গোয়েন্দা তথ্য সূত্র ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, গুচ্ছভুক্ত ভর্তি পরীক্ষায় বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘এ’ ইউনিটে অংশ নিয়ে ইবিতে আবেদন করেন। মেধাতালিকায় স্থান না পাওয়ায় কলেজ বন্ধু কুষ্টিয়ার বাসিন্দা ফরহাদ হোসেন তাকে অবৈধভাবে ভর্তির পরামর্শ দেন। জালিয়াত চক্রের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ফরহাদের পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া বড়ভাই ইকবালের সহায়তা নেন। তার মাধ্যমেই লালচাঁনের সঙ্গে যোগাযোগ ও আর্থিক দেনদরবার ও লেনদেন করেন আহনাফ।
২২ ফেব্রুয়ারি প্রথম দফায় ক্যাম্পাসে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ১৮ হাজার টাকা নিয়ে তাকে ছাত্রলীগের টেন্টে বসিয়ে রাখেন। পরে ভর্তি বাবদ বিভিন্ন রশিদে ব্যাংকে আট হাজার একশ টাকা জমা দিয়ে ভর্তির প্রাথমিক কার্যক্রম সম্পূর্ণ হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগীকে। ভর্তি প্রক্রিয়া শেষে বাকি টাকা পরিশোধের চুক্তি হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তার সহায়তায় প্রতারক চক্রের এক সদস্যকে টাকা দেওয়ার প্রলোভনে ডেকে ডিবি পুলিশে ধরিয়ে দেন। আটক হওয়া আতিকের কাছে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে ভর্তির আবেদন ফরম পাওয়া যায়।
তাৎক্ষণিক জিজ্ঞাসাবাদে আতিক জানান, স্থানীয় রাকিব ও লালচাঁনের নির্দেশে তিনি ক্যাম্পাসে আসেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও উপ-রেজিস্ট্রারের (শিক্ষা) স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ওই বিভাগে ভর্তির একটি ভুয়া তালিকা তৈরি করে এ প্রতারণা করেন বলে জানা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন যুগান্তরকে বলেন, জালিয়াতি চক্রের ওই সদস্যকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। অভিযুক্ত লালচাঁনকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তাকে আটকের জন্য পুলিশ কাজ করছে।
