মামলা প্রত্যাহারে জাবির সাবেক ছাত্রীকে চাপ প্রয়োগের অভিযোগ
জাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২৩, ১০:২৮ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
যৌতুক ও নারী নির্যাতনের মামলা প্রত্যাহার করতে ভুক্তভোগী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক ছাত্রীকে বিভিন্নভাবে হুমকি ও চাপ প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে এক ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত মোস্তফা আহমেদ মানিকগঞ্জ সদরের উত্তর মকিমপুর গ্রামের পনির আহমেদ ও ফিরোজা বেগমের ছেলে। তিনি একটি ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত।
অভিযোগকারী সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের দুই সপ্তাহ পর থেকে মোস্তফা আহমেদ তাকে বিয়ের খরচ নিয়ে মানসিকভাবে কটু কথা শুনিয়ে খোটা দিতে থাকেন। একপর্যায়ে ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে মারধর করেন। টাকা না দেওয়ায় একপর্যায়ে মারধর করে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের সনদ রেখে দিয়ে তাকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এ বছর ১৬ জানুয়ারি ভুক্তভোগী রাজবাড়ী দায়রা জজকোর্টে যৌতুক ও নারী নির্যাতনের মামলা করলে মামলা প্রত্যাহার করার জন্য মোস্তফা আহমেদ ভুক্তভোগীকে বিভিন্নভাবে হুমকি এবং চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বলেন, বিয়ের আগে তার সঙ্গে আমার কয়েক মাসের সম্পর্ক ছিল। তখন আমি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে উচ্চ বেতনে চাকরি করতাম। একপর্যায়ে পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে ঠিক হয়। বিয়ের আগমুহূর্তে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি এবং চাকরিটা ছেড়ে দেই। গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর আমাদের বিয়ে হয় পারিবারিকভাবে। এরপর ২৩ নভেম্বর আমার কাছে বিয়ের খরচের ৯৪ হাজার টাকা এবং পারিপার্শ্বিক খরচসহ ৩ লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে দাবি করেন স্বামী। আমি দিতে না পারায় আমাকে একাধিকবার মারধর করা হয়। একপর্যায়ে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ রেখে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরে আমাকে তালাকের হুমকি দিলে আমি গত ১৬ জানুয়ারি রাজবাড়ী দায়রা জর্জকোর্টে মামলা দায়ের করি।
তিনি আরও বলেন, মামলার পর সে শুনানির আগে জামিন নিয়ে আমাকে মামলা প্রত্যাহার করার জন্য হুমকি এবং চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। আমার ফোন নাম্বার এবং ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়। যার ফলে প্রতিনিয়ত আমি হ্যারেজমেন্টের শিকার হচ্ছি। আমি আমার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।
এ বিষয়ে মোস্তফা আহমেদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর তিনি ফোন কেটে দেন। হোয়াটসঅ্যাপে খুদেবার্তার মাধ্যমে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
অভিযুক্তের ছোট ভাই ইমরান আহম্মেদ অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা ও বানোয়াট উল্লেখ করে বলেন, আমার ভাই ব্যাংকের সিনিয়র কর্মকর্তা। কেন তার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকার জন্য মারধর করবে। তিনি পুরোপুরি একটা নাটক করে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, বিয়ের আগে আমার ভাবির সম্পর্কে আমরা তেমন কিছু খোঁজ নেইনি। বিয়ের পর তার সম্পর্কে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় তার নামে কয়েকটি সংবাদ আমরা দেখতে পাই। তার আগে একবার বিয়ে হয়েছিল এটাও আমরা পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারি। বিভিন্ন ধরনের সমস্যা আমরা তার ভিতরে পেয়েছি। আমরা চাচ্ছি আপসে একটা মীমাংসা হয়ে যাক।
ভুক্তভোগীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট খাইরুজ্জামান সোহেল বলেন, ১৬ জানুয়ারি আদালতে একটা মামলা করা হয়েছে। মামলাটি ১নং আমলি আদালতে আছে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত আদালতে এসে আপসের স্বার্থে জামিন নিয়েছেন।
