|
ফলো করুন |
|
|---|---|
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের মারধরের শিকার হয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দুই শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আমজাদের মোড় এলাকায় এই মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে এক স্থানীয়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
আহত দুই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তারা রামেকেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মারধরের ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী গোলাম মোস্তফা শুভ ও সৈয়দ রাকিবুল কবির।
মারধরের বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের সহপাঠী একই বিভাগ ও শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রহমত-ই-রাব্বি জানান, আমার আহত দুই বন্ধু বিনোদপুরের আমজাদের মোড়ে অবস্থিত ‘মায়ের আঁচল’ ছাত্রাবাসে থাকেন। সোমবার রাতে সেই ছাত্রাবাসে এক বন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা হয় এবং ছাত্রাবাসের মালিকের অনুমতিক্রমে সেখানে সকলে মিলে গান গায়। এ সময় স্থানীয় কিছু বখাটে যুবক ছাত্রাবাসের গেট খোলা থাকায় সেখানে ঢুকে পরে এবং গান গেয়ে জন্মদিন উদযাপনে বাধা দেয়। বিষয়টি নিয়ে তখন দুইপক্ষের কথাকাটাকাটি হয়। পরে তারা চলে আসেন।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় সেই বখাটে যুবকরা পুনরায় ছাত্রাবাসে প্রবেশ করেন এবং আমার বন্ধুদের সঙ্গে আবারও তর্কে জড়ান। এসময় ‘ক্লাসে কিভাবে যাস দেখে নেব’ বলে হুমকি প্রদান করেন। পরে তারা ছাত্রাবাস থেকে বেরিয়ে গিয়ে আশেপাশেই অবস্থান নেন। এরপর সকাল ৯টায় আমার বন্ধুরা ক্লাসে যাওয়ার জন্য ছাত্রাবাস থেকে বের হলে, ৭-৮ জন বখাটে যুবক ছাত্রাবাসের গেটেই আমার বন্ধুদের মধ্যে একজনের মাথায় ও আরেকজনের হাতে রড দিয়ে আঘাত করে। তাদের চিৎকারে ছাত্রাবাসের অন্য শিক্ষার্থীরা বেড়িয়ে আসলে তারা চলে যায়। পরে আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়।
রহমত-ই-রাব্বি বলেন, এই হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়েরই পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের মাস্টার্সের রিয়াদউদ্দীন পাপন নামের এক স্থানীয় শিক্ষার্থী সরাসরি সম্পৃক্ত রয়েছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সঙ্গে বসেছিলাম। আমরা সেই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করাসহ বারবার এই ধরনের সমস্যাগুলোর স্থায়ী সমাধান ও বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বাদী হয়ে পুলিশ প্রশাসনের কাছে মামলা দায়েরের দাবি জানিয়েছি। এছাড়া ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকায়, ফুটেজ দেখে দোষীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির আওতায় আনার দাবিও জানিয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, বিষয়টি নিয়ে তাদের নগরীর মতিহার থানায় অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। এ ঘটনায় মতিহার থানা পুলিশ একজনকে আটকও করেছে বলে জেনেছি।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, ছাত্রাবাসে গান শোনাকে কেন্দ্র করে মারধরের ঘটনায় একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। আটক হওয়া যুবকের বিষয়ে ডিউটি অফিসার জানাতে পারবেন।
এ বিষয়ে মতিহার থানায় কর্মরত ডিউটি অফিসার বলেন, তিনি এই বিষয়ে অবগত নন। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এ ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রিয়াদউদ্দীন পাপনকে আটক করা হয়েছে।
