Logo
Logo
×

শিক্ষাঙ্গন

ইবি ভিসির অডিও ফাঁস, নেপথ্যের মানুষদের খুঁজতে নির্দেশ

Icon

ইবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২৩, ১০:১৫ পিএম

ইবি ভিসির অডিও ফাঁস, নেপথ্যের মানুষদের খুঁজতে নির্দেশ

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভিসির ৯টি অডিও ছড়িয়ে পড়েছে। অডিও ফাঁসের ঘটনায় নেপথ্যের মানুষদের খুঁজতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গঠন করেছে পাঁচ সদস্যের কমিটি। রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর প্রেরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা যায়।

অডিও ফাঁসের ঘটনায় ভিসির অনুপস্থিতিতে তার কার্যালয়ে তালা দিয়ে তিন দিন আন্দোলন করেন চাকরিপ্রত্যাশী ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা ভিসির অপসারণ দাবি ও ভিসির ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ড মাইকে বাজিয়ে আন্দোলন করেন।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক ও কর্তাব্যক্তির অডিও ফাঁসের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে দাবি করে এমন কর্মকাণ্ডের নেপথ্যের মানুষদের খুঁজতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গঠন করেছে পাঁচ সদস্যের কমিটি। কমিটিকে দোষীদের চিহ্নিত করে দ্রুত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

কমিটি প্রয়োজনে যেকোনো সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর, পেশাদারী প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির সহযোগিতা নিতে পারবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে। জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. রেজওয়ানুল ইসলামকে কমিটির আহ্বায়ক ও আইসিটি সেলের সিস্টেম এনালিস্ট ড. নাঈম মোরশেদকে কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- আই আই ই আর-এর পরিচালক প্রফেসর ড. মামুনুর রহমান, গণিত বিভাগের প্রফেসর মিজানুর রহমান ও আইসিটি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাদেক আলী। 

রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর প্রেরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা যায়। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে- বিগত দুই-তিন সপ্তাহ যাবত এবং ইতোপূর্বেও বিভিন্ন সময়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসন, শিক্ষকসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের নামে অনেক ক্ষেত্রে অডিও, ভিডিও ধারণ করে ফেক আইডি খুলে তা প্রচার করা হচ্ছে। কখনও কখনও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মাইক বাজিয়েও এ ধরনের প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এসব বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ণ করছে। বিষয়গুলো সামগ্রিকভাবে খতিয়ে দেখে এসবের নেপথ্যের মানুষদের চিহ্নিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিটিকে।

প্রসঙ্গত, ‘ফারাহ জেবিন’ ও ‘মিসেস সালাম’ নামে পৃথক দুটি ফেসবুক আইডি থেকে ১৬ ও ১৭ ফেব্রুয়ারি ইবি ভিসির পাঁচটি ফোনালাপের অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ১৯ ও ২০ ফেব্রুয়ারি আরও দুইটি অডিও ফাঁস হয়। পরে ওই আইডিগুলো থেকে পরপর মোট ৯টি অডিও ভাইরাল করা হয়। অডিওগুলোতে নিয়োগ বোর্ড, চাকরির প্রশ্নের বিষয়ে কথোপকথন, চাকরির বিনিময়ে আর্থিক লেনদেন ও শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিয়োগ বাণিজ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে ভিসিকে কথা বলতে শোনা যায়।

এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি ইবি থানায় জিডি করা হয়। পরে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১৮, ২০ ও ২২ ফেব্রুয়ারি ভিসির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত অস্থায়ী চাকরিজীবী পরিষদ ও সাবেক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা ভিসির অপসারণ দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

এ ঘটনায় গত ২০ ফেব্রুয়ারি গোপন ডিভাইসের খোঁজে ভিসির কার্যালয়ে ও বাসভবনে তল্লাশি চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়াও, গত ১৯ ও ২২ ফেব্রুয়ারি পৃথক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মোট পাঁচটি নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ড স্থগিত করে কর্তৃপক্ষ। পরে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ভিসির একান্ত সচিব আইয়ূব আলীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এদিকে অডিও ফাঁসের ঘটনায় সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন শাপলা ফোরাম। একইসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ভিসির অডিও ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরসমূহ বিশ্লেষণপূর্বক ‘অস্বস্তিকর অবস্থা’ থেকে পরিত্রাণের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে আচার্য, প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসিসহ বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় তারা।

এছাড়া অডিও ফাঁসের ঘটনায় গত শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিও সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করে। প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসিসহ বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য আহ্বান করেন তারা।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম