ইবি ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
ইবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৩, ১০:৩১ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
স্থানীয় বখাটে কর্তৃক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় হত্যাচেষ্টার মামলা করা হয়েছে। পাশাপাশি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন।
সোমবার রাত ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে রেজিস্ট্রার বাদী হয়ে শৈলকূপা থানায় এ মামলা দায়ের করেন। এ সূত্র ধরে ইতোমধ্যে ঝন্টু নামের একজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতারও করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় শৈলকূপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম গ্রেফতার ও মামালার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মামলায় স্থানীয় দুই বখাটে আকাশ ও আলিমের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনকে মামলার আসামি করা হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার স্বার্থে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে মাইকিং করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ও প্রধান ফটক এলাকায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যায়নরত ছাত্রছাত্রীদের সার্বক্ষণিকভাবে নিজ পরিচয়পত্র বহন করতে বলা হয়েছে। নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে প্রশাসন।
ঘটনায় বলা হয়েছে- স্থানীয় শেখপাড়া বাজার থেকে মোটরসাইকেলে তেল নিয়ে ফেরার পথে ইসলামী ব্যাংকের এটিএম বুথের সামনে পৌঁছলে আসামি আকাশ ও আলিমসহ অজ্ঞাত ২০-২৫ জন রড ও লাঠি দ্বারা তাদের পথ রোধ করে। কোনো কিছু বলার আগেই খুন করার উদ্দেশ্যে আকাশ লোহার রড দ্বারা জিসাদের মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করলে জিসান মাথা সরিয়ে নিলে তার ডান হাতে ও পায়ে আঘাত লাগে। অন্য অজ্ঞাত আসামিরা সুপ্তকে লাঠি দিয়ে পিঠিয়ে জখম করে।
এ ঘটনা জানাজানি হলে ক্যাম্পাস থেকে শতাধিক ছাত্র ঘটনাস্থলে গেলে আসামিরা খুন-জখমের হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে আহতদের ইবি মেডিকেল প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তাদের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শৈলকূপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসান বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এতে দুজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। জাহাঙ্গীর হোসেন ঝন্টু নামের সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, সোমবারের ঘটনার পর রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে মাইকিং করা হয়েছে।
জানা যায়, সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় লেকে বান্ধবীদের সঙ্গে বসেছিলেন ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থীসহ তার বন্ধুরা। এ সময় বাইকে চড়ে বহিরাগত স্থানীয় বখাটে আকাশ ও আলীম বান্ধবীসহ তাদের ভিডিও ধারণ করেন। এ সময় তাদের ভিডিও ডিলিট করতে বলা হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ায় বখাটেরা। এ ঘটনার জেরে শেখপাড়া বাজারে বাইকে তেল নিতে গেলে অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দেয়।
এ সংবাদে সন্ধ্যা ৬টার দিকে দোষীদের গ্রেফতার ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার দাবিতে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ ও টায়ার জ্বালিয়ে আন্দোলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। পরে কুষ্টিয়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের আশ্বাসে রাত ১০টার দিকে রাস্তা ছেড়ে ভিসির বাংলোর সামনে অবস্থান নেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মৃদুল হাসান রাব্বীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তাদের দাবি তুলে ধরেন। ভিসি দাবি মেনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিলে রাত সাড়ে ১১টায় আন্দোলন স্থগিত করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
