Logo
Logo
×

শিক্ষাঙ্গন

ইউপি সদস্যকে পেটালেন জাবির ছাত্রলীগ নেতা

Icon

জাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৩, ১০:৩৫ পিএম

ইউপি সদস্যকে পেটালেন জাবির ছাত্রলীগ নেতা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সংলগ্ন এলাকায় পাথালিয়া ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্যকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে। শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাঙ্গামাটি এলাকার পানির ট্যাংকির কাছে এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার ইউপি সদস্য হলেন আনোয়ার হোসেন রানা। তিনি সাভারের পাথালিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য ও আশুলিয়া থানা বিএনপির প্রচার সম্পাদক।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাব্বির হোসেন নাহিদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান জয়। সাব্বির বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শহীদ রফিক জব্বার হলের আবাসিক ছাত্র এবং মেহেদী পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের একই ব্যাচের শিক্ষার্থী ও মওলানা ভাসানী হলের আবাসিক ছাত্র। তারা উভয়েই শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী।

ভুক্তভোগী রানা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ইসলামনগর বাজার থেকে মশারি কিনে ফেরার পথে সাব্বির ও জয় আরও ৭-৮ জনকে নিয়ে আমার পথ আটকায়। এ সময় তারা আমাকে বলে- ‘এই দাঁড়া। তুই এত রাতে এখানে কি করিস? কোথায় গিয়েছিলি?’ পরে তারা আমাকে মারধর করে এবং বলে তোকে যেন আর দল করতে না দেখি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাব্বির নাহিদকে ফোন করলে তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। তবে মারধরের ঘটনা অস্বীকার করে অভিযুক্ত মেহেদী হাসান জয় বলেন, রানা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দীর্ঘদিন থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নাশকতার পরিকল্পনা করে আসছেন। এজন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের জায়গা থেকে আমরা তাকে নিষেধ করেছি। যাতে তিনি এমনটা না করেন।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় এক ব্যবসায়ী ও দোকানের কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

শুক্রবার রাতে ইসলামনগর এলাকায় ‘মেসমেরাইজ’ নামের একটি জুতার দোকানে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের ঘটনার বিচার চেয়ে আশুলিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী।

ভুক্তভোগীরা হলেন- দোকানের মালিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ৪২ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী রোমেন রায়হান, তার বড় ভাই বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী ও বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নেওয়াজ রাসেল বাপ্পি ও দোকানের কর্মচারী মিরাজুল ইসলাম মিরাজ।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই দোকানে জুতা কিনতে যান সাব্বির ও মেহেদী। তবে জুতা বিক্রি করার পর পালিশ করতে দেরি হওয়ায় দোকানের কর্মচারী মিরাজুল ইসলামকে দ্রুত পালিশ করার জন্য ধমক দিতে থাকেন সাব্বির। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সাব্বির ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারতে মারতে দোকানের মধ্যে থেকে বাইরে রাস্তায় নিয়ে আসেন। রাস্তায় কয়েক দফায় মারতে থাকে। পরে ওই কর্মচারীকে কান ধরিয়ে উঠবস করান এবং পা ধরে মাফ চাওয়ায়। এ সময় দোকান মালিকের বড় ভাই নেওয়াজ রাসেল বাপ্পি থামানোর চেষ্টা করলে তার মুখে দুইটা থাপ্পড় মারেন মেহেদী হাসান জয়।

ভুক্তভোগী মিরাজুল ইসলাম বলেন, দোকানের নিয়ম অনুযায়ী আমি জুতা পালিশ করতে থাকি। তারা তাড়াহুড়ো শুরু করলে একটু সময় লাগবে বলে জানাই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আমাকে বেধড়ক কিল, ঘুসি ও লাথি মারতে থাকে। পা ধরে মাফ চাওয়ার পরও তারা আমাকে মারতে থাকে। একপর্যায়ে আমার গোপনাঙ্গে জোরে লাথি মারে সাব্বির ভাই।

দোকান মালিক রোমেন রায়হান বলেন, আমি বাইরে ছিলাম। দোকানে গিয়ে দেখি তারা আমার কর্মচারীকে পেটাচ্ছে। তারা আমার বড় ভাইকেও থাপ্পড় দিয়েছে। এছাড়া আমার দোকান বন্ধ রাখার জন্য হুমকি দিয়ে গেছে। তাই এ ঘটনার বিচার চেয়ে আশুলিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।

মারধরের ঘটনা অস্বীকার করে মেহেদী হাসান জয় বলেন, আমাদের তাড়া থাকায় দোকানের কর্মচারীকে তাড়াতাড়ি জুতা পালিশ করতে বলি। তখন সে আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। এ নিয়ে আমাদের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। তবে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, আমাদের নির্দিষ্ট সাংগঠনিক প্রক্রিয়া রয়েছে। যদি কেউ নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় অভিযোগ করেন তবে আমরা তদন্তসাপেক্ষে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।

থানায় সাধারণ ডায়েরি প্রসঙ্গে জানতে আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম