Logo
Logo
×

শিক্ষাঙ্গন

‘আলোচনায় আসতে’ রাবির দুই ছাত্রদল নেতাকে ছাত্রলীগ নেতার মারধর

Icon

রাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৩, ১০:৫৭ পিএম

‘আলোচনায় আসতে’ রাবির দুই ছাত্রদল নেতাকে ছাত্রলীগ নেতার মারধর

ডেকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদলের দুই নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের এক সাবেক নেতার বিরুদ্ধে। রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ একাডেমিক ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

তবে শাখা ছাত্রলীগেরই একাধিক নেতার দাবি সম্মেলনকে সামনে রেখে 'আলোচনায় আসতেই' এ মারধরের ঘটনা ঘটিয়েছেন অভিযুক্ত সেই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা।

মারধরের ঘটনায় আহত ছাত্রদল নেতারা হলেন- শাখা ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-আহবায়ক রাশেদ আলী ও আহবায়ক কমিটির সদস্য নাফিউল ইসলাম জীবন। তারা আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (রামেক) ৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা নিয়ে রোববার রাত ১১টায় নিজের ছাত্রাবাসে ফিরেছেন বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সাকিবুল হাসান বাকী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী।

মারধরের শিকার শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সাকিবুল হাসান ছাড়াও মতিহার হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রিয়াদ, সোহরাওয়ার্দী হল ছাত্রলীগের সদস্য মুন, দর্শন বিভাগের ছাত্র টিপু সুলতানসহ কয়েকজন মিলে তাদের মারধর করেন।

জানতে চাইলে মারধরের শিকার ছাত্রদল নেতা নাফিউল বলেন, একাডেমিক কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ে গেছিলাম। ক্যাম্পাস থেকে ফিরব এমন সময় শহীদুল্লাহ একাডেমিক ভবনের সামনে বাকী (সাবেক ছাত্রলীগ নেতা) একটা ছেলেকে দিয়ে তার কাছে আমাকে ডেকে নিয়ে যায়। আমি তাদের সঙ্গে বসার একপর্যায়ে তারা আমার পদ-পদবি নিয়ে নানা প্রশ্ন শুরু করে ও আমার মোবাইল কেড়ে নেয়। এমন সময় রাশেদ ভাই আসলে তাকে ও আমাকে বাকী এবং তার সহযোগীরা মারধর করে। এমনকি আমার বাইকের চাবিও তারা রেখে দেয়।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা সাকিবুল হাসান বাকী বলেন, মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এমনি কথা বলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তারা রাজনৈতিকভাবে ব্যক্তি স্বার্থে মারধরের বিষয়টি ছড়ানোর চেষ্টা করছে।

বাইকের চাবি রেখে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্রদল নেতাদের একজন বাইকের চাবি রেখে চলে যায়। পরে চাবি নিয়ে আমরা প্রক্টর দপ্তরে জমা দিছি।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাখা ছাত্রলীগের নেতা বলেন, এটা পুরোপুরি নাটক। সে কিছুদিন আগেও তার বিভাগের এক ছেলেকে মারধর করে একটা টাইমলাইনে আসার চেষ্টা করছে। তিনি সাত বছর ক্যাম্পাসের রাজনীতিতে ছিলেন না, হলে থাকেন না। হুট করে এভাবে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মারধরের নাটক সাজিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছেন তিনি ছাত্রদলের হাত থেকে ক্যাম্পাসকে ভালো রাখবেন। এটা মূলত টাইমলাইনে আসার জন্য।

'আলোচনায় আসতে' এ ঘটনা ঘটিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে সাকিবুল হাসান বাকী বলেন, এটা আলোচনায় আসা বা নাটক করার মতো কোনো বিষয় না। এটা একটা আদর্শিক ব্যাপার। সম্প্রতি বাংলাদেশে দণ্ডিত পলাতক আসামি তারেক জিয়ার নির্দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে ছাত্রদল। সেটার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আমাদের জায়গা থেকে যতটুকু তৎপর থাকা যায়, তাদের প্রতিরোধ করা যায়- সেই জায়গা থেকে আমাদের এ কার্যক্রম।

নিজ দলের নেতাকর্মীদের মারধরের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহাম্মেদ রাহী বলেন, আমাদের নেতাকর্মীর ওপর হামলা করে তারা অপরাধ করেছে। আমরা ছাত্র হিসেবে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারি না। তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত করেছি। প্রশাসন পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আমরা আইনি পদক্ষেপ নেব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আসাবুল হক বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। এ ঘটনায় একজন একটা বাইকের চাবি প্রক্টর অফিসে জমা দিয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে রাতে প্রমাণসাপেক্ষ আমি চাবিটা হস্তান্তর করেছি। আমি এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম