ইবি কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি লাঞ্ছিত করলেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী
ইবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:২২ পিএম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর হামলার শিকার ও লাঞ্ছিত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এটিএম এমদাদুল আলম।
মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে প্রশাসন ভবনের নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও কোনো প্রকার ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন।
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটেছে বলে তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছেন কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি। একই সঙ্গে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে এ ঘটনার ইন্ধন দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলন শেষে বিকাল ৪টায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে প্রশাসন ভবনের পেছনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। এ সময় তিনি হামলাকারী ও ইন্ধনদাতাদের বিচারের আওতায় দাবি জানান।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, ২৬ জুলাই থেকে বয়সসীমা বৃদ্ধি, পোষ্যকোটায় শর্ত শিথিলসহ ১৬ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন কর্মকর্তারা। তবে আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে কিছু কর্মকর্তা তাদের কাজ অব্যাহত রেখেছিলেন। দুপুরের দিকে হিসাব শাখার পরিচালক জাকির হোসেন পাশের রুমে দাপ্তরিক কাজ করছিলেন। এ সময় কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি তাকে কাজ থেকে বিরত থাকার দাবি জানাতে তার কক্ষে যান।
এ সময় আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া কর্মকর্তা- আব্দুল হান্নান, মীর জিল্লুর রহমান, মনিরুল ইসলাম, মীর মোর্শেদুর রহমান, আসাদুজ্জামান মাখন, জাহিদুল ইসলাম, তবারক হোসেন বাদলসহ (ছাত্রলীগ সম্পাদকের বাবা) কয়েকজন কর্মকর্তা সমিতির সভাপতির সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান।
এ সময় সেখানে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের নেতৃত্বে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুসাইন মজুমদার, ছাত্রলীগ নেতা শাহীন আলম, বিপুল হোসেন খান, বাঁধনসহ ২০-২৫ জন নেতাকর্মী উপস্থিত হন। এ সময় কর্মকর্তাদের ইন্ধনে ও ছাত্রলীগ সম্পাদক জয়ের নেতৃত্বে তাকে লাঞ্ছিত, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, তুই-তুকারি করা, মারতে উদ্যত এবং হামলা চালানো হয়। পরে সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান মুকুটসহ কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত হয়ে এমদাদকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
সংবাদ সম্মেলনে কর্মকর্তা সমিতির নেতারা বলেন- আন্দোলন বানচাল করার জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রশাসনের সুবিধাভোগী কিছু কর্মকর্তা বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে। তাদের ইন্ধনে রুমের বাইরে ছাত্রলীগ সেক্রেটারির নেতৃত্বে ২০-৩৫ জন নেতাকর্মী আমার ওপর পূর্বপরিকল্পিতভাবে লাঞ্ছিত করে, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে, মারতে উদ্যত হয়। এ সময় তারা বাইরে নিয়ে আমাকে পেটানোর হুমকি দেয়। হান্নানসহ ৮-১০ জন আমার ওপর মারমুখী আচরণ করে। ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে গুটিকয়েক কর্মকর্তা প্রশাসনের ইন্ধনে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, শিক্ষার্থীরা তার কাজ নিয়ে ওই অফিসে গেলে হট্টগোল হচ্ছিল। আমরা পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে শিক্ষার্থীদের বাইরে নিয়ে এসেছি। হামলার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
প্রক্টর অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসেন আজাদ বলেন, আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম। কাজ করা নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে হট্টগোল হচ্ছিল। আমি কর্মকর্তা সমিতির সভাপতিকে সেখান বের করে নিয়ে তার কক্ষে দিয়ে আসি। লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।