জবি ছাত্রদলের দুই নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ
জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৫, ১০:৫৮ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদলের দুই নেতার বিরুদ্ধে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই জুনিয়র শিক্ষার্থীর কাছে চাঁদা দাবি ও দোকান দখলের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তরা হলেন- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ বিন হাসিম ও ওমর ফারুক। দৈনিক ৫০০ টাকা চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় দোকানের মালামাল নিয়ে যান তারা।
মঙ্গলবার দুপুরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ওমর ফারক অ্যাকাউন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের ১২ ব্যাচের ও রাশেদ বিন হাসিব ৮ম ব্যাচের শিক্ষার্থী। দুইজনই ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহসভাপতি কাজী জিয়া উদ্দিন বাসেতের অনুসারী বলে জানা যায়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন- নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আনিকা, নিশু, তানভীর, জোবায়ের ও শিহাব প্রান্ত।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থী মিলে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে ‘খাওন দাওন’ নামে একটি খাবারের দোকান চালু করেন। প্রাথমিকভাবে ব্যবসা ভালো চললেও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পরীক্ষার কারণে সাময়িকভাবে দোকান বন্ধ রাখা হয়। এ সুযোগে জবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ বিন হাসিম ও ওমর ফারুক দোকানের জায়গা দখলের চেষ্টা চালান এবং প্রতিদিন ৫০০ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে দোকানের মালামাল নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শিহাব প্রান্তো বলেন, টিএসসিতে থাকা আমাদের দোকান ‘খাওন দাওন’ পেশী শক্তি ব্যবহার করে দখল করার চেষ্টা করেন ছাত্রদলের রাশেদ ও ফারুক। তারা প্রথমে দৈনিক ৫০০ টাকা চাঁদা দাবি করে, তাতে আমরা সম্মত না হলে আজ (মঙ্গলবার) দুপুর ১টায় আমার দোকানের সব মালামাল সরিয়ে ফেলেন আমার অজান্তেই। আমরা ইতিমধ্যে দোকানে ১ লাখ ৪০ হাজার মতো টাকা খরচ করেছি।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে ওমর ফারুক বলেন, আমরা কোনো চাঁদা চাইনি। ওই ছেলেরা তাদের দোকান পাশের এক ব্যবসায়ীর কাছে ভাড়া দিয়ে প্রতিদিন ২০০ টাকা চাঁদা নিচ্ছিল। সেই ব্যবসায়ী আমাদের কাছে অভিযোগ করেন। তাই আমরা দোকানটি সংস্কার করে অন্য একজনকে দেওয়ার চিন্তা করেছিলাম মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে।
এ দোকানের দখল সংক্রান্ত বিষয়ে তার কোনো এখতিয়ার আছে কিনা জানতে চাইলে ওমর ফারুক বলেন, এখানে কারো কোনো এখতিয়ার নেই। ওদেরও নেই। আমরা শুধু অন্য কারও জন্য কর্মসংস্থান তৈরির চেষ্টা করছিলাম।
অন্যদিকে, অভিযুক্ত রাশেদ বিন হাসিমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহ সভাপতি কাজী জিয়া উদ্দিন বাসেত বলেন, আমি পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করি। অনেকে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। আমি এ বিষয়ে অবগত নয়। বিষয়টি জেনে জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, বিষয়টি শুনেছি। আমরা আহ্বায়কের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
জবি ছাত্রদল আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, আমি এ বিষয়ে অবগত নই। তবে যদি অভিযোগ সত্যি হয়, তাহলে যথাযথ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং যারা আগের দোকানের মালিক ছিলেন, তাদের স্বাভাবিকভাবে ব্যবসা চালানোর সুযোগ দেওয়া হবে।
