ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাককানইবি) ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট হাসিনার নির্দেশে ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। 

এতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও আওয়ামীপন্থি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ১৩০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৭০ থেকে ৮০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। 

সোমবার দুপুরে ময়মনসিংহ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আশিকুর রহমান। মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। 

মামলার বিবরণীতে বলা হয়- বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ৩ আগস্ট নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সমবেত হয়ে হাসিনার আস্থা ব্যানারে সমবেত হয়ে ছাত্রদের গালিগালাজ করেন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রাতে হলে মিটিং করে পরদিন ৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় গেটে সমবেত হয়ে সাধারণ ছাত্রদের ওপর হামলা করে। এ সময় এলোপাতাড়ি গুলিসহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে আন্দোলনকারীদের আহত করা হয়। 

এ ঘটনার পরদিন শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলে বাদী থানায় মামলা নিয়ে গেলে পুলিশ গড়িমসি করে তিন মাস মামলা নেয়নি। পরে সবার সঙ্গে আলোচনা করে গত রোববার ময়মনসিংহ সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার আবেদন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহ্বায়ক আশিকুর রহমান।

মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাকিবুল হাছান রনি, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইব্রাহিম খলিল, সাব্বির আহমেদ, নজরুল ইসলাম বাবু, বর্তমান সভাপতি আল মাগমুদ কায়েস, রিয়েল সরকার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রানা, রাকিবুল ইসলাম, আপেল মাহমুদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোশাররফ শবনম, হীরক মুশফিক, তারিকুল ইসলাম, ড. সেলিম আল মামুন, ড. উজ্জল কুমার প্রধান, ড. নজরুল ইসলাম, সঞ্জয় মুখার্জী, ড.শফিকুল ইসলাম, নাহিদুল ইসলাম, রেজোয়ন শুভ্র, মোল্লা আমিনুল, মাসুম হাওলাদার, জুয়েল মোল্লা, মাসুদ রানাসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আসামি করা হয়।  

সোমবার দুপুরে ম্যাজিস্ট্রেট নাছিমা খাতুন মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন।  

মামলার বাদী আশিকুর রহমান বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার ঘটনায় থানায় মামলা নিতে গড়িমসি করায় আদালতে মামলা করতে দেরি হয়েছে। আমরা ন্যায়বিচারের আশায় এ মামলা করেছি। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আহ্বান জানাব দ্রুত সময়ে আসামিদের গ্রেফতার করে যেন আইনের আওতায় আনা হয়। 

মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম বলেন, মামলার বাদী আশিকুর রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত দ্রুতবিচার আইনে মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। আগামী তারিখের আগেই এ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার পর আদালত পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান তিনি।