আ. লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ

জাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৫, ০৪:৪৪ এএম

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উভয় লেন অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। ছবি: যুগান্তর
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উভয় লেন অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার রাত ১টা থেকে ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক (ডেইরি গেট) সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে এই বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন তারা।
এর আগে রাত পৌনে বারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে শিক্ষার্থীদের একটি বিক্ষোভ-মিছিল নতুন রেজিস্ট্রার ভবন, শহীদ মিনার, অমর একুশে হয়ে প্রধান ফটকের সামনে এসে শেষ হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ কর, করতে হবে-করতে হবে’, ‘জুলাই হত্যার বিচার কর, করতে হবে-করতে হবে’, ‘আওয়ামী লীগের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ-রাজপথ’—প্রভৃতি স্লোগান দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১ ব্যাচের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নাদিয়া রহমান অন্বেষা বলেন, যে সরকার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ওপর দাঁড়িয়ে আছে, সে সরকার আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে তালবাহানা করছে। বাংলাদেশের মানুষ ৫ আগস্ট তাদের রক্ত দিয়েই ঘোষণা দিয়েছে, এই দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে আর চায় না। আওয়ামী লীগের মিছিল মানে বিপ্লবীদের মৃত্যু ঘনিয়ে আসা। সরকার যদি ব্যর্থ হয়, তবে আমরা কোনো আইনের তোয়াক্কা না করে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাজপথে নামব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮তম ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম বলেন, আর কোনো কথার ফুলঝুরি নয়। আমরা বারবার রাস্তায় এসে এই যৌক্তিক দাবি আদায় করতে চাই না। আমরা চাই সরকার এই যৌক্তিক দাবি উপলব্ধি করুক। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের যৌক্তিক বিষয়ে আর কোনো প্রহসন আমরা চাই না। এ দেশে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’কে সামনে আনা হচ্ছে। যে আওয়ামী লীগ আমার ভাইদের নির্বিচারে খুন করেছে, শিশুদের হত্যা করেছে, আমাদের বোনদের নির্দয়ভাবে রক্তাক্ত করেছে, সেই আওয়ামী লীগ আর রাজনীতি করতে পারবে না। তাদের ঠাঁই এই বাংলায় হবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম ব্যাচের তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দুই হাজার ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছিলেন এবং বিশ হাজার আহত হয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের জন্য প্রয়োজনে আমরা ছাত্র-জনতা আবারো জীবন দেব, তবুও এই বাংলার মাটিতে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করার কোনো অধিকার দেব না।
৪৭তম ব্যাচের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, আওয়ামী লীগ ফিরবে তবে রাজনীতিতে নয়, আসামি হয়ে বিচারের কাঠগড়ায় ফিরবে। আমরা দেখেছি এখন আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা বিদেশ পালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু এই সরকার বিচার নিশ্চিত করতে পারছে না। আমরা জানি সেনাবাহিনীর কাছে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার আছে, কিন্তু তারা আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করছে না বা আইনের আওতায় আনছে না। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে না পারে, তবে আমরা এই সরকারকে টেনে হিঁচড়ে নামাব।