শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয়বারের মতো অংশ নিয়েছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার দক্ষিণ ভবনিপুর গ্রামের আদনান উজ-জামান। আর ভাইয়ের প্রতিবন্ধকতা জয়ে সব সময় পাশে রয়েছে তার ছোট বোন আতিকা জিনাত প্রাপ্তি।

ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় মনোযোগী আদনানের স্বপ্ন একদিন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করা। সেই লক্ষ্যের জন্যই এবারো ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তিনি।

আদনানের বাবার নাম আজগর আলী। তিনি প্রাথমিক শিক্ষাগ্রহণ করেন কুষ্টিয়া হাউজিংয়ের সবুজ কানন প্রিপারেটরি স্কুল থেকে। এরপর আড়ুয়াপাড়া দিনমনি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় ৪.৫৬ জিপিএ এবং কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় ৪.০৮ জিপিএ অর্জন করেন।

জন্মের পর স্বাভাবিক থাকলেও দেড় বছর বয়সে হঠাৎ করে চলাফেরায় সমস্যা দেখা দেয় আদনানের। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নেওয়া হয়। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাঁটাচলায় জটিলতা বেড়ে যায়। এখনো তার চিকিৎসা চলমান। তবে শারীরিক সমস্যাকে হার না মেনে সে এগিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার আলোয়।

এবারের ইবি ভর্তি পরীক্ষায় আদনান অংশ নিয়েছেন মীর মশাররফ হোসেন অ্যাকাডেমিক ভবনের ৪২০ নম্বর কক্ষে। পরীক্ষায় সহায়তার জন্য শ্রুতিলেখকের দায়িত্ব পালন করেছে তার ছোট বোন আতিকা জিনাত প্রাপ্তি। সে বর্তমানে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

আদনান বলেন, ইবিতে কোনো সাবজেক্টে পড়ার সুযোগ পেলে খুবই ভালো লাগবে। পরীক্ষা ভালো হয়েছে। অনার্স শেষে ঢাবি থেকে মাস্টার্স করতে চাই।

তার বাবা আজগর আলী বলেন, আদনান ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় খুবই আগ্রহী। তাকে কখনো পড়ার কথা বলতে হয়নি। এমনকি আজ সকালেও পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে তাকে পড়ার টেবিল থেকে ডেকে আনতে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা একটু অনুপ্রেরণা পেলে অনেক দূর যেতে পারে। আমি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।