রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
বহিষ্কৃত ২ ছাত্রদল নেতা ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ
রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫, ১০:৩৬ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
চাঁদাবাজির দায়ে বহিষ্কৃত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদলের দুই নেতাসহ নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের এক কর্মীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বুধপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে বুধবার (২৫ জুন) প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ এবং নগরীর মতিহার থানায় জিডি করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবিব ও কর্মী হাসিবুল ইসলাম হাসিব। এর আগে গত বছরের ১৯ অক্টোবর তারা চাঁদাবাজির দায়ে সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। আরেক অভিযুক্ত হলেন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বিশাল।
অপরদিকে ভুক্তভোগী হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জসিম উদ্দিন। তিনি আগে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে।
লিখিত অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জসিম উদ্দিন উল্লেখ করেন, মাগরিবের নামাজ শেষে বন্ধুরাসহ আমি বুধপাড়া জিয়া স্কুল রোড এলাকায় হাঁটছিলাম। এ সময় বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতা আহসান হাবীব, হাসিব ও বিশালসহ ১০-১২ জনের মোটরসাইকেল বহর তাদের পথরোধ করে। তারা আমাকে আলাদা করে নেয় এবং বিগত সময়ের ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের ছবি দেখিয়ে রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলে। একপর্যায়ে তারা দুই হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।
অভিযোগপত্রে তিনি আরও উল্লেখ করেন, হলে থাকার জন্য আমি তখন কিছু বড় ভাইয়ের সঙ্গে প্রোগ্রামে অংশ নিই, কিন্তু কখনো কোনো ছাত্র নির্যাতন বা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। আমি জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের পক্ষে সক্রিয় ছিলাম- এই প্রমাণও দিই। তবুও তারা আমাকে মারধর করে। পরে আমি দেড় হাজার টাকা দিয়ে কোনোমতে ছাড়া পাই। তারা আমাকে হুমকি দেয়, ভবিষ্যতে ছাত্রদলের প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে হবে। এ ঘটনার পর থেকে আমি চরম মানসিক বিপর্যয়ে আছি এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
চাঁদাবাজির বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত আহসান হাবিব বলেন, আমি একটা প্রোগ্রামে যাচ্ছিলাম, তখন ওর সঙ্গে দেখা হয়। এমনি জিজ্ঞেস করছিলাম ছাত্রলীগ করে কি-না। আমাদের মধ্যে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে; কিন্তু চাঁদাবাজির কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ অভিযোগ মিথ্যা।
আরেক অভিযুক্ত বিশাল বলেন, সেখানে চাঁদাবাজির কোনো ঘটনা ঘটেনি। হাবিব শুধু জিজ্ঞাসাবাদ করছিল। এ অভিযোগ মিথ্যা।
অভিযুক্ত হাসিবুল ইসলাম হাসিবের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমদ রাহী বলেন, অভিযুক্তরা ইতোমধ্যেই কেন্দ্র থেকে বহিষ্কৃত। তাদের কোনো কার্যক্রমের সঙ্গে রাবি ছাত্রদলের সম্পর্ক নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী অভিযোগের বিচার করা হোক। আর বিশাল নামের ছেলেটাকে আমি চিনি না। ওর বিষয়ে বলতে পারছি না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
