Logo
Logo
×

শিক্ষাঙ্গন

বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে কর্মচারীকে কুবি ছাত্রদল নেতার মারধর

Icon

কুবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৪:০১ এএম

বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে কর্মচারীকে কুবি ছাত্রদল নেতার মারধর

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) চাকরিতে যোগদানের দিনেই এক কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে কুবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান সোহাগের বিরুদ্ধে।

গত ৩ জুলাই বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে ঐ কর্মকর্তাকে মারধর করেন। অভিযোগ রয়েছে অর্থ লেনদেন বিনিময় করা প্রার্থীর চাকরি না হওয়ায় এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন।

ভুক্তভোগী কর্মকর্তা সম্প্রতি প্রশাসনিকভাবে রেজিস্ট্রার দপ্তরে কার্য সহকারী পদে নিয়োগ পান এবং ৩ জুলাই ছিল তার যোগদান দিবস।

অভিযুক্ত হাসান সোহাগের বর্তমানে ছাত্রত্ব নেই। তবে তিনি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে কমিটিতে রয়েছেন। তিনি সদস্য সচিব মুস্তাফিজুর রহমান শুভর পক্ষের রাজনীতি করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ঐদিন সকালে অভিযুক্ত ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক হাসান সোহাগ সকালে ভুক্তভোগীকে কল দিয়ে ছাত্রদলের পরিচয় দিয়ে দেন এবং দেখা করার কথা বলেন। ভুক্তভোগী দেখা করবেন বলে নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ব্যস্ততার কারণে আর দেখা করতে পারেননি। 

ঐদিন বিকালে প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করেন ‘তুই আজাদ?’ ভুক্তভোগী ‘হ্যাঁ’ বলার সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশ্যে চড় মারেন। এসময় সেখানে ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আবুল বাশার উপস্থিত ছিলেন বলে জানা যায়।

জানা যায়, ভুক্তভোগী তাকে চিনতেন না। তাকে কেন মারা হয়েছে তাও তা তিনি জানেন না। সেসময় ভুক্তভোগীকে মেরে বের হয়ে যান অভিযুক্ত সোহাগ। অফিস শেষে বাড়িতে ফেরার সময় আবারো ক্যাম্পাস গেটের বাহিরে তাকে আটকে রাখেন অভিযুক্ত হাসান সোহাগ ও তার সঙ্গের লোকজন।

অভিযোগ ও মারধরের বিষয় স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত হাসান সোহাগ। ছাত্রত্ব না থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে কর্মকর্তাকে মারার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তাকে কল দিয়েছিলাম যে সে আমার সঙ্গে দেখা করে। সে প্রথমে কল ধরে আমাকে মিথ্যা বলে কিন্তু পরবর্তীতে কল দিলে আর পাওয়া যায়নি। সে মোবাইল বন্ধ করে রেখেছিলো। তাই আমার রাগ উঠে যায়। পরে রেজিস্ট্রার দপ্তরে তারে পাই। সেখানে রাগের মাথায় তাকে একটি থাপ্পড় মারি।’

গুঞ্জণ রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ বাণিজ্য করে আসছেন ছাত্রদলের এই নেতা। উক্ত পদ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে হয়েছে অর্থ লেনদেন। কিন্তু ঐ প্রার্থী চাকরি না পাওয়ায় এমন ঘটনা ঘটান।

ছাত্রদলের কতিপয় নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছাত্রদলের পাওয়ারে নিয়মিত প্রশাসনিক ভবনে বিভিন্ন জনের চাকরির জন্য তদবির করছেন তিনি। এছাড়াও ছাত্রদল ও এলাকার ক্ষমতা দেখিয়ে প্রভাব বিস্তার করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

কর্মকর্তাকে মারার বিষয়ে ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আতিকুর বলেন, ঘটনাটি আমি জানতাম না। তবে এমন ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই আমরা সাংগঠনিকভাবে পদক্ষেপ নিবো। এটি আমাদের আদর্শের সঙ্গে যায় না। যথাযথ প্রমাণ পেলে প্রয়োজনে আমরা আইনি পদক্ষেপ নিবো।

ছাত্রদলের সদস্য সচিব মুস্তাফিজুর রহমান শুভর অনুসারীর এমন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, এই ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।

এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ঐ ভুক্তভোগী আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ জানাতে বলেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম