জবিতে শিক্ষক ও বাগছাস নেতাদের ওপর ছাত্রদলের হামলা
জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ১১:২৮ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকসহ বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখার তিন নেতার উপর হামলা চালিয়েছে শাখা ছাত্রদলের নেতকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ সাজিদ ভবনের নিচে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিন দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রফিক বিন সাদেক রেসাদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলে বিভাগে আটকে রাখে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। পরে তাকে মারধর শুরু করে। এসময় একই বিভাগের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ড. এ কে এম রিফাত হাসান এবং সহযোগী অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম তাকে রক্ষায় এগিয়ে এলে তাদেরকেও গালিগালাজ ও হামলা করে ছাত্রদলের নেতকর্মীরা।
একই সঙ্গে শাখা বাগছাস সভাপতি মো. ফয়সাল মুরাদ, মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস হাসান ও যুগ্ম-আহবায়ক ফারুককেও ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে মারধর করে। আহত ফয়সাল মুরাদ ও ফেরদৌস ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
ফয়সাল মুরাদ যুগান্তরকে বলেন, ফারুকের উপর শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান ও সদস্য সচিব শামসুল আরেফিনের নেতৃত্বে হামলা করা হয়। আমি গিয়ে তাদের বলি, ফারুক জুলাই আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী। ১৯ জুলাই আন্দোলনের সময় তার মাথায় গুরুত্বর আঘাত লেগেছিল। তাকে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে এভাবে মারধর করা ঠিক নয়। তারপরও তারা তাকে মারধর করে।
তিনি আরও বলেন, জবি ছাত্রদলের ১২ থেকে ১৩ জন যদি ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো, আমি তাদের একজন ছিলাম। ২৮ অক্টোবর ২০১৩ সালে পল্টনে গুলি খেয়েছিলাম। সেই আমাকেও ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে শামসুল আরেফিনের নেতৃত্বে তার কর্মীরা কিলঘুষি মেরেছে। ছাত্রদলের যারা আমার এবং আমার জুলাই সহযোদ্ধাদের উপর যারা হামলা চালিয়েছে তাদের বিচার করতে হবে। তারা প্রত্যেকে অছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নামে অছাত্ররা সন্ত্রাস কায়েম করছে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। শিক্ষকদের উপরও হামলা চালানো হয়েছে। গালিগালাজ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে এগুলো পাওয়া যাবে।
হামলার শিকার ফেরদৌস বলেন, আমাদের এক জুলাই যোদ্ধাকে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে মারধর করা হয়। শিক্ষকদের সহায়তায় তাকে বাঁচাতে এলে আমাদের উপরও হামলা করে ছাত্রদল। সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এই হামলার বিচার চাই।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, আমরা জানতে পারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা প্রবেশ করেছে। এর আগে সাজিদ নামে একটি ছেলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিল। তারা ক্যাম্পাসে এসে সংগঠিত হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের অরাজকতার পায়তারা চালাচ্ছে। যারা এদের (ছাত্রলীগ) মাধ্যমে আহত হয়েছে, আঘাত পেয়েছে, এদের (ছাত্রলীগ) ধরতে গেলে তারাই উল্টো ছাত্রদলের বিরুদ্ধে মব সৃষ্টি করে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, ঘটনা শোনামাত্রই আমরা পুরো প্রক্টরিয়াল বডি সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করি। শিক্ষক সমিতির সভাপতি বিষয়টি সুরাহা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিনিয়র অধ্যাপকের সিদ্ধান্ত সবার মেনে নেওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নিবে।
