আবু সাঈদ হত্যা, পুলিশ কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসহ ৭১ জনের নামে মামলা
রংপুর ব্যুরো
প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৫, ০৯:২০ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে কয়েকজন ছাত্র আহত হওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আরও একটি মামলা দায়ের করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেছেন। ঘটনার দশ মাস পরে মঙ্গলবার গভীর রাতে তাজহাট থানায় ওই মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।
মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক, একাধিক কর্মচারী, ৮ পুলিশ সদস্য, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ ৭১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। ওই মামলায় আরও প্রায় অজ্ঞাতনামা শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার সারমর্মে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও তৎকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হাসিবুর রশিদ উস্কানিমূলক বক্তব্য দেন। এরই ধারাবাহিকতায় আসামিরা গত বছরের ১১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নিহত ছাত্র আবু সাঈদকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা চেপে ধরে এবং পরে ১৫ ও ১৬ জুলাই বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনরত শিক্ষার্থীর ওপর সশস্ত্র হামলা ও গুলিবর্ষণ করে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩ জন শিক্ষার্থী গুরুতর জখম ও গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। এই ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্ত আসামিরা সরাসরি জড়িত ছিলেন।
মামলায় আসামি করা হয়েছে- রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের তৎকালীন সহকারী পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার দুই কর্মকর্তা আলী ইমরান ও আরিফুজ্জামান, উপ-পুলিশ কমিশনার আবু রায়হান মারুফ ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার শাহানুর আলম পাটোয়ারী, তাজহাট মেট্রোপলিটন থানার ওসি রবিউল ইসলাম, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ফাঁড়ি ইনচার্জ বিভূতি ভূষণ রায়, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও আমির হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মণ্ডল আসাদ ও সহকারী অধ্যাপক মশিউর রহমান, সেমিনার সহকারী আশিকুন্নাহার টুকটুকি, উপ-রেজিস্ট্রার মাহবুবা আকতার ও তৌহিদুল ইসলাম জনি, সহকারী রেজিস্ট্রার রফিউল হাসান রাসেল, ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি পোমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজার রহমান শামীম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল হাসান, সহ সভাপতি বিধান বর্মণ, গ্লোরিয়াস ফজলে রাব্বী, আখতার হোসেন, শাহীন ইসলাম, মমিনুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ধনঞ্জয় রায় ও সাখাওয়াত হোসেন, যুবলীগের রংপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রণি, তাজহাট থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জিকরুল মাহবুব শোভনসহ ৭১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও শতাধিক জনকে আসামি করা হয়েছে।
তাজহাট থানার ওসি শাহ আলম সরকার মামলা দায়ের করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ ঘটনায় যাদের আহত হওয়ার বিষয়ে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলে মামলার বর্ণনায় যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ছাত্র রফিকুল ইসলাম, সোহেল মিয়া, মোতালেবুর রহমান মিঠু, মো. মাসুদ, চন্দন সূত্র ধর, সুমাইয়া আকতার, আশিকুজ্জামান নুর জয়, এসএম সিয়াম, সোহান আলী, মতিউর রহমান, শরিফুল ইসলাম সুমন, তাওহিদুল হক সিয়াম, সাইফুল ইসলাম, নাঈমুল ইসলাম, সাখাওয়াত হোসেন সায়েম, তৌহিদুল তুহিন, শফিকুল রহমান, বেঞ্জির আহমেদ, আবরার শাহরিয়ার আনিস, নুরল ইসলাম, ওমর ফারুক, আসিফ মাহমুদ, গোলাম রহমান শাওন, মারির হোসেন, ফাহিম ফয়সাল সৈকত, আব্দুর সবুর, মাহমুদুল হক, আলাউদ্দিন চৌধুরী, সোহাগ আলী, অলিউল ইসলাম, তছরিকুল ইসলাম, কামরুল হাসান ও ফরহান মাহমুদ রোহান। তারা আন্দোলনের ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বলে বলা হয়েছে।
