Logo
Logo
×

রাজধানী

‘৯ মাসের যন্ত্রণা নিয়ে রায় শুনতে এসেছি, হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই’

Icon

হাজারীবাগ (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ০২:৪৬ পিএম

‘৯ মাসের যন্ত্রণা নিয়ে রায় শুনতে এসেছি, হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই’

উত্তরার আহত আন্দোলনকারী মুস্তাঈন বিল্লাহ। ছবি: যুগান্তর

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকাল থেকেই ভিড় জমে শহিদ পরিবারের সদস্য ও জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত বীরযোদ্ধাদের। তারা অপেক্ষা করছিলেন স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঘোষিত রায় শোনার জন্য। আবেগ, ক্ষোভ ও দীর্ঘদিনের যন্ত্রণা—সব মিলিয়ে স্থানটি পরিণত হয় এক গভীর প্রতীক্ষার প্রহরে।

উত্তরার আহত আন্দোলনকারী মুস্তাঈন বিল্লাহ, যিনি ১৯ জুলাই বিএনএস সেন্টারের সামনে পুলিশের ছোড়া গুলিতে পিঠে এবং যুবলীগ সভাপতির ছোড়া গুলিতে বাম হাতে গুরুতর আহত হয়েছিলেন—সেই ঘটনার স্মৃতি বর্ণনা করতে গিয়ে গলা ধরে আসে তার।

তিনি বলেন, ‘আমি ৯ মাস হাসপাতালে কাতরেছি। ব্যথায় ঘুমাতে পারিনি। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বুলেট নিয়ে যে যন্ত্রণা সয়ে বেঁচে ছিলাম—তার একটাই উদ্দেশ্য ছিলো হাসিনার বিচার দেখা। আমরা চাই—যেভাবে আমরা হাসপাতালে আহাজারি করেছি, স্বৈরাচার হাসিনাকে আজ ফাঁসির মঞ্চে তেমনই আহাজারি করতে হোক।’ 

বিল্লাহ আরও জানান, বাম হাতের ভেতরে এখনো এক ইঞ্চির একটি বুলেট রয়ে গেছে। সেই জায়গায় তিনি কোনো অনুভূতি পান না। তবুও আদালতে উপস্থিত হয়েছেন একটি কারণে— ‘আমরা আজ রায় দেখতে এসেছি। সারা বাংলাদেশ তাকিয়ে আছে। এমন ক্ষমতাধর স্বৈরশাসকের বিচার দেখার মুহূর্ত বহুদিনের প্রতীক্ষা।’

তার দাবি—সরকার যেন দ্রুত শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর করে।

একই ক্ষোভ ঝরে পড়ে আহত জুলাই যোদ্ধা মো. সালমান হোসেনের কণ্ঠেও। তিনি মেরুল বাড্ডা ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সামনে পুলিশের ছোড়া গুলিতে গুরুতর আহত হন। গুলি তার বা উরুর একপাশ দিয়ে ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়, টুকরো টুকরো হয়ে যায় উরুর হাড়।

তিনি বলেন, ‘আমি তিন মাস হাসপাতালের বিছানায় কাতরিয়েছি। ব্যথায় ঘুমাতে পারিনি। আমাদের মতো হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যার পর স্বৈরশাসক হাসিনা আরাম-আয়েশে জীবন কাটাবে—এটা হতে পারে না। ’

তার মতে, ‘যেভাবেই হোক, হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের জড়িত নেতাকর্মীদের দেশে ফিরিয়ে এনে সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর করতেই হবে। ’

সকাল থেকে ট্রাইব্যুনালের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা শহিদ পরিবারের সদস্যরাও একই দাবি জানান। তারা বলেন, জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে যারা গুলি চালিয়েছে, যারা হত্যা করেছে, যারা নিপীড়ন চালিয়েছে—তাদের সবাইকে আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পুরো এলাকা জুড়ে ছিল প্রতীক্ষা, ক্ষোভ আর শোকের মিলিত স্রোত। রায় ঘোষণার অপেক্ষায় সবার চোখে ছিল একটাই দাবি—‘স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচার হোক, রায় কার্যকর হোক।

ঘটনাপ্রবাহ: শেখ হাসিনার রায়


আরও পড়ুন

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম