ধানমন্ডি ৩২-এ উত্তেজনা
বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা, টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৪৯ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্য আসামিদের রায় ঘোষণা কেন্দ্র করে সোমবার সকাল থেকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে উত্তেজনা দেখা যায়। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা সড়কের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে ‘লীগ ধর, জেলে ভর’ স্লোগান দিতে থাকেন। অনেকে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ছাত্র-জনতার উপস্থিতি। একপর্যায়ে দু’টি এক্সকেভেটর নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ির ধ্বংসাবশেষ পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ।
আন্দোলনকারীদের ওপর লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। পালটা ইটপাটকেল ছোড়েন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এতে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। এ সময় নিউমার্কেট থেকে মিরপুরমুখী সড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ৩২ নম্বরের প্রবেশমুখ ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ধাওয়া-পালটাধাওয়া চলছিল।
দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ৩২ নম্বরের সামনের মিরপুর সড়কে দুটি এক্সকেভেটর রয়েছে। বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে এক্সকেভেটর ঢোকানোর চেষ্টা করছেন। এ সময় তাদের বাধা দেয় সেনাবহিনী ও পুলিশ। বাধার মুখে বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্র-জনতা। তারা বাধা উপেক্ষা করে ৩২ নম্বরে ঢোকার চেষ্টা করলে প্রথমে লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করা হয়। পরে মুহূর্তেই ছোড়া হয় একের পর এক সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার গ্যাস। ছাত্ররাও পালটা ইটপাটকেল ছুড়লে পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

বেলা পৌনে ২টার দিকে দুই ভাগে ভাগ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আবার জড়ো হন। তখন ৩২ নম্বর এলাকা আবারও জুলাই যোদ্ধাদের মিছিল স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে। মিছিলে থাকা ছাত্র-জনতা ‘একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর’, ‘৩৬ না ৩২, ৩৬-৩৬’, ‘৩২-এর ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’সহ একের পর এক নানা স্লোগান দেন। মিছিল ধানমন্ডি ৩২-এর দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে। ধানমন্ডি, কলাবাগান, পান্থপথ ও সোবহানবাগ এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
মিরপুর থেকে আসা আন্দোলনকারী হামিম হোসেন যুগান্তরকে বলেন, রাজধানীতে খেলার মাঠের অভাব। এখানে আমরা খেলার মাঠ বানাব। রাকিব হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী নিজেকে মোহাম্মদপুর থানা এনসিপি নেতা পরিচয় দিয়ে বলেন, এক্সকেভেটর নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা আমাদের ওপর অ্যাকশন শুরু করে। আমাকে এক্সকেভেটর থেকে নামিয়ে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়।
ঘটনাস্থলে থাকা ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম বলেন, ৩২ নম্বরে পুলিশের ব্যারিকেড ছিল। বিক্ষোভকারীরা সেটি ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। আমরা তাদের প্রবেশ করতে দেয়নি। তখন তারা ইট ছোড়ে।
সন্ধ্যায় ডিএমপির রমনা বিভাগের নিউমার্কেট অঞ্চলের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. জাহাঙ্গীর কবির যুগান্তরকে বলেন, এখনো তিন দিক থেকে আন্দোলনকারীরা অবস্থান নিয়েছেন। রাস্তা বন্ধ রয়েছে। পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র্যাবের সদস্যরা আছেন।
