মেয়ের লাশ চেয়ে আঁচল পাতছেন আশামনির মা
যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৬:১২ এএম
রাজধানীর কদমতলী ডিএনডির খালে আশামনির উদ্ধারাভিজানে ডুবরীরা। ইনসেটে শিশু আশামনি।
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ছয় দিন চলে গেলেও খোঁজ মেলেনি রাজধানীর কদমতলী ডিএনডির খালে নিখোঁজ ৫ বছরের শিশু আশামনির (তোহা)।
গত শনিবার বল কুড়াতে গিয়ে কদমতলীর মেরাজনগরের ডিএনডি খালে তলিয়ে যায় ৫ বছর বয়সী শিশুটি।
এর পর থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা খালে নেমে তল্লাশি চালালেও সফল হননি তারা।
এ কয়দিন কান্নায় বুক ভাসানো বাবা-মা এখন সন্তানের বেঁচে থাকার আশা ছেড়ে দিয়েছেন। অন্তত লাশ বুকে জড়িয়ে ধরার আকুতি জানাতে আঁচল পেতেছেন আশামনির মা তানিয়া।
কান্নারত কণ্ঠে আশামনির বাবা এরশাদের আকুতি– ‘কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানি শুকায়া গেছে। আমাদের মেয়ে যে আর বেঁচে নেই তা আমরা জানি। এখন শুধু একটিই চাওয়া– যক্ষের ধনের লাশটা একবার হলেও দেখতে চাই। অন্তত আমার মেয়ের লাশটা খুঁজে দেন আপনারা।’
নিখোঁজ আশামণির মা তানিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমাদের আশামণিকে কি শেষ দেখা দেখতে পাব না? আমরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে দ্রুত আমাদের আশামনিকে উদ্ধার চাই।’
আশামণিকে উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসকর্মীদের ব্যর্থ হওয়া নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন আশামণির স্বজনসহ স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের বক্তব্য, ‘আধুনিক যুগে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন একটি শিশুকে উদ্ধার করতে পারছে না, বিষয়টি মর্মান্তিক। এই খালে আমাদের কারও শিশু পড়ে গেলে তো একই ভাগ্য জুটবে কপালে।’
তবে খালে প্রচুর ময়লা থাকার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আকাশ কুমার ভৌমিক।
জানা গেছে, গত রোববার থেকে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে নিজস্ব অর্থায়নে শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে খালের ময়লা পরিষ্কার ও শিশু উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার এরশাদ হোসেন জানান, ‘ঘটনার পর থেকে বিরতিহীন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। প্রতিদিনই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ডুবুরিরা খালে তল্লাশি চালাচ্ছেন। এতে বিন্দুমাত্র অবহেলা করা হচ্ছে না। ’
অভিযান অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আজও শিশুটিতে উদ্ধারে তৎপরতা চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস।
উল্লেখ্য, কদমতলীর মিরাজনগরের পাশের মোহাম্মদনগর কালভার্ট এলাকার বাসিন্দা এরশাদ ও তানিয়া দম্পতি। তাদের বড় মেয়ে আশামনি। ঘটনাস্থলের পাশেই এরশাদের একটি কনফেকশনারি রয়েছে। এ বছরই মিরাজনগর ফারহা মডেল স্কুলের শিশু শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল আশামনি। তাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ জেলায়।
গত শনিবার বিকালে সঙ্গীদের সঙ্গে খেলতে গিয়ে খালের পানিতে তলিয়ে যায় আশামনি। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা গিয়ে তল্লাশি শুরু করেন। এর পর পেরিয়ে যায় ছয় দিন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এখনও শিশুটির সন্ধান পাননি।
