Logo
Logo
×

রাজধানী

গাজীপুরে একটি গার্মেন্টসে নামাজ বাধ্যতামূলক

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১০:০৮ পিএম

গাজীপুরে একটি গার্মেন্টসে নামাজ বাধ্যতামূলক

ফাইল ছবি

গাজীপুরের একটি তৈরি পোশাক কারখানায় অফিস চলার সময় প্রতিদিন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মসজিদে গিয়ে জোহর, আসর ও মাগরিবের নামাজ পড়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি মাল্টিফ্যাবস লিমিটেড নামের ওই কারখানায় এ নিয়ে একটি নোটিস জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, এই তিন ওয়াক্ত নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় পাঞ্চ মেশিনে পাঞ্চ করতে হবে। বিবিসি বাংলার খবরে এমন তথ্য জানা গেছে।

বলা হয়েছে, যদি কোন কর্মী মাসে সাত ওয়াক্ত পাঞ্চ করে নামাজ না পড়েন; তবে একদিনের সমপরিমাণ হাজিরা কেটে নেয়া হবে তার বেতন থেকে।

কারখানাটির অপারেশন্স বিষয়ক পরিচালক মেসবাহ ফারুকী বলেন, এটি শুধু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য। 

যদিও নোটিসে সব কর্মীর কথা উল্লেখ রয়েছে। তিনি বলেন, সবাই আমরা নামাজ পড়ি। ইসলামের অনুসারী হিসেবে নামাজ আমাদের ওপর ফরজ। এখানে মুসলমান যারা আছেন; সবাই নামাজ পড়েন। কিন্তু তারা নামাজ পড়েন বিক্ষিপ্তভাবে।

কর্মীদের মতানৈক্য কমাতে একটি উপায় হিসাবে কারখানায় নামাজ বাধ্যতামূলক করার এই সিদ্ধান্ত বলেও তিনি জানিয়েছেন। ফারুকী বলেন, আমাদের এখানে বিভিন্ন মতের লোক আছেন। কিন্তু এখানে সবাইকে একটা টিম হিসেবে কাজ করতে হয়। 

‘এখানে ফেব্রিক ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে নিটিং সেক্টরের হয়ত একটা সমস্যা থাকে। একে অন্যের ওপর দোষারোপ চলতেই থাকে। তো আমি এটার সমাধান হিসেবে চিন্তা করলাম তাদের যদি একসঙ্গে বসানো যায়, একসঙ্গে কিছু সময় যদি তারা কাটান, তাদের মধ্যে দূরত্বটা কমবে।’

সেক্ষেত্রে মসজিদ ছাড়া একসঙ্গে বসানোর কোন পন্থা খুঁজে পাননি বলে জানালেন ফারুকী। নামাজ বাধ্যতামূলক করার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যগত একটি ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি। 

কারখানাটির অপারেশন্স বিষয়ক পরিচালক বলেন, সারাদিন বসে বসে কাজ করায় কোলেস্টেরল বাড়ছে, ডায়াবেটিস বাড়ছে। মসজিদ চারতলায় হওয়াতে কিছুটা ব্যায়ামও হচ্ছে।

নোটিসে একদিনের বেতন কাটার কথা থাকলেও এ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করা হয়নি বলে তিনি জানান। ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের নামাজে বাধ্য করা হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।

কর্মীদের বাধ্যতামূলক নামাজ পড়ানোর ঘটনা বিদেশি ক্রেতাদের মধ্যে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ভাবমর্যাদা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশুর ।

তিনি জানান, বাংলাদেশে পোশাক শিল্পে অনেক সমস্যা থাকার পরেও ক্রেতারা এখনো মুখ ফিরিয়ে নেয়নি।

‘তাজরিন ও রানা প্লাজায় ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ঘটনার আগে বিদেশি ক্রেতাদেরও এতকিছু জানা ছিল না। কিন্তু কারখানার ভেতরে এরকম আইন যদি তারা করেন, তাহলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে,’ বললেন মিশু।

রফতানিতে জাতীয় পুরস্কার পাওয়া এই কোম্পানি জাপান, রাশিয়া ও আমেরিকার বেশ কিছু দেশে তাদের ব্যবসা করছে। ২০১৬ সালে তাদের রফতানি আয় ছিল ৯ কোটি ডলার।

 

গাজীপুর

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম