নার্সিং কাউন্সিলে নার্স দম্পতিকে ৮ ঘণ্টা আটকে রাখার অভিযোগ
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স আনন্দ কুমার দাস ও তার স্ত্রী একই প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র স্টাফ নার্স সুজেলা রাণী রায়কে বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, নার্স দম্পতিকে বুধবার দুপুর ২টা থেকে রাত সোয়া ১০টা পর্যন্ত কাউন্সিলে আটকে রাখা হয়। যদিও বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বলছে- সেখানে কোনো নার্স আটকে রাখার ঘটনা ঘটেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বুধবার দুপুর ২টার দিকে আনন্দ কুমার দাস তার স্ত্রী সুজেলা রাণী রায়ের নার্সিং রেজিস্ট্রেশন কার্ড সংগ্রহের জন্য বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিলে যান। নার্সিং রেজিস্ট্রেশন কার্ড পাঁচ বছর পর পর পুনঃনবায়ন করতে হয়। সেখানে সুজেলা রাণী রায়ের রেজিস্ট্রেশন নবায়নের আবেদনের তারিখ বলতে না পারায় রাব্বি নামে এক কর্মকর্তা রেজিস্ট্রেশন কার্ড প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করেন। আনন্দ কুমার দাস বারবার অনুরোধ করলে ওই কর্মকর্তা তাকে দালাল বলায় তিনি ক্ষুব্ধ হন। উভয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়ান।
কাউন্সিলের অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তখন এই নার্স দম্পতির ওপর চড়াও হন। এরপর কাউন্সিলে ভাঙচুরের অভিযোগে আলাদা দুটি কক্ষে তাদের আটকে রাখেন। রাত ১০টা পর্যন্ত এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আটক আনন্দ কুমার দাসের কথা হয়। তখনো তাদের দুজনকে আলাদা দুটি কক্ষে আটকে রাখার অভিযোগ করেন।
আনন্দ কুমার দাস যুগান্তরকে বলেন, দুপুর ২টার সময় আমার স্ত্রীকে নিয়ে তার রেজিস্ট্রেশন কার্ড সংগ্রহের জন্য কাউন্সিলে আসি। সেখানে কবে আবেদন করেছিলাম সেই তারিখ বলতে না পারায় রাব্বী নামে এক কর্মকর্তা আমার সঙ্গে বিতর্কে জড়ায়। অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। তার কথার প্রতিবাদ জানালে অন্যরা এসে চড়াও হন। আমার স্ত্রীর ওপর শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করেন। এরপর কাউন্সিলে ভাঙচুরের অভিযোগ দিয়ে মামলা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ারও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। এরপর থেকে কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের দুজনকে আটকে রাখেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নার্স দম্পতিকে আটকে রাখার পেছনে নার্সদের দুটি গ্রুপের বিবাদ অন্যতম মূল কারণ। গ্র্যাজুয়েট নার্স ও ডিপ্লোমা নার্স নামে তাদের মধ্যে দুটি গ্রুপ রয়েছে। আনন্দ কুমার দাস গ্র্যাজুয়েট নার্স নেতা। তিনি বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের অর্থ সম্পাদক। অন্যদিকে বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিলের শীর্ষ ব্যক্তি ডিপ্লোমা নার্স। ফলে তুচ্ছ বিষয়ে আনন্দকে শায়েস্তা করার চেষ্টা করেন তিনি।
বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খান মো. গোলাম মোরশেদ যুগান্তরকে বলেন, আমাদের দুজন সহকর্মীকে দুপুর থেকে নার্সিং কাউন্সিলে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে আমি কাউন্সিলে ছুটে আসি। এরপর নার্সিং কাউন্সিলের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করি। সমাধানের চেষ্টা চালাই। কিন্তু আনন্দ কুমার দাস ও সুজেলা রাণী রায়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে কাউন্সিল। তারা ভাঙচুরের প্রমাণ দেখাতে পারেনি। এরপরও নির্দোষ এই নার্স দম্পতিকে দীর্ঘ ৮ ঘণ্টা আটকে রাখে। এটা স্বেচ্ছাচারিতা ছাড়া কিছুই নয়।
তিনি বলেন, আনন্দ কুমার দাস ও তার স্ত্রী সুজেলা রাণী রায়কে আটকে রাখার পর ঘটনাস্থলে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের পরিচালক রাশেদুল মান্নাফ কবির, মহাখালী নার্সিং কলেজ এবং ঢাকা নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ উপস্থিত হন। পরে তাদের প্রচেষ্টায় ছাড়িয়ে আনা হয়।
নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) রাশিদা আক্তার এ ঘটনা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমার জানামতে নার্সিং কাউন্সিলে আজ এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি।
নার্সিং কাউন্সিলে নার্স দম্পতিকে ৮ ঘণ্টা আটকে রাখার অভিযোগ
যুগান্তর প্রতিবেদন
০৩ মে ২০২৩, ২২:৫১:৫৯ | অনলাইন সংস্করণ
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স আনন্দ কুমার দাস ও তার স্ত্রী একই প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র স্টাফ নার্স সুজেলা রাণী রায়কে বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, নার্স দম্পতিকে বুধবার দুপুর ২টা থেকে রাত সোয়া ১০টা পর্যন্ত কাউন্সিলে আটকে রাখা হয়। যদিও বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বলছে- সেখানে কোনো নার্স আটকে রাখার ঘটনা ঘটেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বুধবার দুপুর ২টার দিকে আনন্দ কুমার দাস তার স্ত্রী সুজেলা রাণী রায়ের নার্সিং রেজিস্ট্রেশন কার্ড সংগ্রহের জন্য বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিলে যান। নার্সিং রেজিস্ট্রেশন কার্ড পাঁচ বছর পর পর পুনঃনবায়ন করতে হয়। সেখানে সুজেলা রাণী রায়ের রেজিস্ট্রেশন নবায়নের আবেদনের তারিখ বলতে না পারায় রাব্বি নামে এক কর্মকর্তা রেজিস্ট্রেশন কার্ড প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করেন। আনন্দ কুমার দাস বারবার অনুরোধ করলে ওই কর্মকর্তা তাকে দালাল বলায় তিনি ক্ষুব্ধ হন। উভয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়ান।
কাউন্সিলের অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তখন এই নার্স দম্পতির ওপর চড়াও হন। এরপর কাউন্সিলে ভাঙচুরের অভিযোগে আলাদা দুটি কক্ষে তাদের আটকে রাখেন। রাত ১০টা পর্যন্ত এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আটক আনন্দ কুমার দাসের কথা হয়। তখনো তাদের দুজনকে আলাদা দুটি কক্ষে আটকে রাখার অভিযোগ করেন।
আনন্দ কুমার দাস যুগান্তরকে বলেন, দুপুর ২টার সময় আমার স্ত্রীকে নিয়ে তার রেজিস্ট্রেশন কার্ড সংগ্রহের জন্য কাউন্সিলে আসি। সেখানে কবে আবেদন করেছিলাম সেই তারিখ বলতে না পারায় রাব্বী নামে এক কর্মকর্তা আমার সঙ্গে বিতর্কে জড়ায়। অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। তার কথার প্রতিবাদ জানালে অন্যরা এসে চড়াও হন। আমার স্ত্রীর ওপর শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করেন। এরপর কাউন্সিলে ভাঙচুরের অভিযোগ দিয়ে মামলা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ারও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। এরপর থেকে কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের দুজনকে আটকে রাখেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নার্স দম্পতিকে আটকে রাখার পেছনে নার্সদের দুটি গ্রুপের বিবাদ অন্যতম মূল কারণ। গ্র্যাজুয়েট নার্স ও ডিপ্লোমা নার্স নামে তাদের মধ্যে দুটি গ্রুপ রয়েছে। আনন্দ কুমার দাস গ্র্যাজুয়েট নার্স নেতা। তিনি বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের অর্থ সম্পাদক। অন্যদিকে বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিলের শীর্ষ ব্যক্তি ডিপ্লোমা নার্স। ফলে তুচ্ছ বিষয়ে আনন্দকে শায়েস্তা করার চেষ্টা করেন তিনি।
বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খান মো. গোলাম মোরশেদ যুগান্তরকে বলেন, আমাদের দুজন সহকর্মীকে দুপুর থেকে নার্সিং কাউন্সিলে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে আমি কাউন্সিলে ছুটে আসি। এরপর নার্সিং কাউন্সিলের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করি। সমাধানের চেষ্টা চালাই। কিন্তু আনন্দ কুমার দাস ও সুজেলা রাণী রায়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে কাউন্সিল। তারা ভাঙচুরের প্রমাণ দেখাতে পারেনি। এরপরও নির্দোষ এই নার্স দম্পতিকে দীর্ঘ ৮ ঘণ্টা আটকে রাখে। এটা স্বেচ্ছাচারিতা ছাড়া কিছুই নয়।
তিনি বলেন, আনন্দ কুমার দাস ও তার স্ত্রী সুজেলা রাণী রায়কে আটকে রাখার পর ঘটনাস্থলে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের পরিচালক রাশেদুল মান্নাফ কবির, মহাখালী নার্সিং কলেজ এবং ঢাকা নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ উপস্থিত হন। পরে তাদের প্রচেষ্টায় ছাড়িয়ে আনা হয়।
নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) রাশিদা আক্তার এ ঘটনা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমার জানামতে নার্সিং কাউন্সিলে আজ এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023