৩ জনকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেই জীবন দিলেন অনিক
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৩০ এএম
ছবি: যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
শিশুসন্তানসহ মিজান ও মুক্তাকে বাঁচাতে প্রথমে এগিয়ে এসেছিলেন ১৮ বছরের তরুণ অনিক। তার পেছন থেকেই দৌড়ে আসেন অনিকের বন্ধু। পরক্ষণই সরে যেতে সক্ষম হন তিনি। মুহূর্তেই না ফেরার দেশে চলে যায় অনিকসহ একে একে চারজনের তাজা প্রাণ।
২১ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীতে টানা বৃষ্টিতে বিদ্যুতায়িত হয়ে চারজনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। সেদিন তিনজনের জীবন বাঁচাতে গিয়ে জীবন যায় অনিকের।
সে ঘটনার খোঁজ নিতে মিরপুরের ঝিলপাড় বস্তিতে হাজির হয় যুগান্তর প্রতিনিধি। যেখানে থাকতেন অনিক। কথা হয় স্থানীয় প্রতিবেশী, বন্ধু ও স্বজনদের সঙ্গে।
তারা জানান, অটোরিকশাচালক ছিলেন অনিক। অত্যন্ত ভদ্র ও বিনয়ী স্বভাবের ছিলেন তিনি। ছোট-বড়, নারী-পুরুষসহ সমাজের পিছিয়ে পড়া তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীদের সঙ্গেও ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। কারও বিপদ দেখলেই ছুটে যেতেন এ যুবক।
এই গ্যারেজটির ওপরেই থাকতেন অনিক। তার এক প্রতিবেশীর সহযোগিতায় আমরা ভেতরের একটি সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠি। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ব্যবহৃত আসবাবপত্র
এভাবেই পড়ে আছে অনিকের। মামা বলে ডাকতেন এমন একজন আমাদের দেখাচ্ছিলেন অনিক কোন কোন জামাকাপড় পরতেন।
মাত্র কয়দিন আগেই কিনেছিলেন নতুন পাঞ্জাবি। সেই পাঞ্জাবি আর পরা হলো না তার। সেদিনের ঘটনায় তিনিও বাকরুদ্ধ।
প্রতিবেশীরা জানান, জলাবদ্ধতায় বিদ্যুতায়িত হয়ে অনিকের মৃত্যু হলেও কেউ আসেনি খোঁজ নিতে। দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে অনিক ছিলেন দিনমজুর বাবার একমাত্র কর্মক্ষম সন্তান। অনিকের বড়ভাই বাকপ্রতিবন্ধী। তাই স্থানীয়দের দাবি, আর্থিক সহযোগিতাই পারে অন্যের জীবন বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন দেওয়া অনিকের পরিবারকে।
গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে টানা বৃষ্টিতে ঢাকার বিভিন্ন অঞ্চলে জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়া। মিরপুরের ঝিলপাড় হাজি সড়কের ঝিলপাড় বস্তির সামনেও জমে হাঁটুপানি। আর সেই জমে থাকা পানিতে অবৈধ বৈদ্যুতিক তারে বিদ্যুতায়িত হয়ে শিশুসহ চারজন নিহত হন।
এ ঘটনায় স্থানীয়রা দায়ী করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামকে।
