চাকরি স্থায়ীর দাবিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে তালা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৪১ এএম
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বকেয়া পরিশোধ ও চাকরি রাজস্বকরণের দাবিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সব গেটে তালা দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন কোভিড-১৯ প্রকল্পের অধীনে নিয়োগ পাওয়া স্বাস্থ্যকর্মীরা।
মঙ্গলবার বিকালে
চারটার দিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সব গেটে তালা লাগিয়ে দেয় স্বাস্থ্যকর্মীরা। এতে অধিদপ্তরের
দুই শতাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ভবনের ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। কেউ বের হতে পারছিলেন
না। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে স্বাস্থ্যকর্মীরা তালা খুলে দিলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বের
হন। তবে পার্কিংয়ে রাখা তাদের কোনো গাড়ি বেড় হতে দেওয়া হয়নি।
আন্দোলনরত স্বাস্থ্যকর্মী
মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমরা জানুয়ারি থেকে বেতন পাচ্ছি না। চলতি বছরের জুনে প্রকল্পের
মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে। তাই আমরা চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছি।’
তিনি বলেন,
‘গত রোববার থেকে আমরা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি নিয়েছি। ওইদিন বিকালে স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তাদের জন্য চেষ্টার আশ্বাসও দিয়েছেন। দাবি পূরণ না হওয়ায় সোমবার
থেকে অনশন শুরু করেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো আশ্বাস না পেয়ে আজ গেটে তালা
দিয়েছি।’,
মহাখালী সংক্রামক
ব্যাধি হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট শামীম শাহ যুগান্তরকে বলেন, তাদের বাদ দিয়ে
নতুন নিয়োগ দিলে দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় হবে। চাকরি রাজস্বখাতভুক্তকরতে
ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টা, স্বাস্থ্য উপদেষ্টাসহ একাধিক দপ্তরে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু কোন অগ্রগতি হচ্ছেনা। বাধ্য
হয়ে আমাদের কঠোর হতে হচ্ছে।
আন্দোলনকারীরা
আরও বলেন, সরকার ‘কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপারডনেস (ইআরপিপি)’
প্রকল্পের এক হাজার চারজন কর্মী নিয়োগ দেয়। কোভিডের সময় যখন সবাই ঘরে, তখন তারা হাসপাতাল,
কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে কাজ করেছেন। এখন তাদের কারও চাকরির বয়স নেই। এই অবস্থায় হঠাৎ
করেই এক হাজার চারজন জনবল বেকার হয়ে যাবে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অনাহারে জীবনযাপন করতে
হবে। তারা চান সরকার কাজের স্বীকৃতি দিয়ে চাকরি স্থায়ীকরণের ব্যবস্থা করুক।
এসময় তিন দফা
দাবি জানান তারা। সেগুলো হলো
‘কোভিড-১৯’ মহামারি যোদ্ধাদের ৩১ ডিসেম্বরের পর চাকরি
বহাল; স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় জুলাই ২০২৪ থেকে জুন ২০২৯ মেয়াদে
বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাবিত পঞ্চম সেক্টর কর্মসূচিভুক্ত ওপিগুলো অতি দ্রুত এক হাজার
৪ জন জনবলকে বহাল রেখে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং কোভিড-১৯ যোদ্ধাদের বয়স শিথিল রেখে যথাযথ
নিয়ম মেনে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত করতে হবে।
সার্বিক বিষয়ে
কথা বলতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর যুগান্তরকে বলেন, গত
জুনে আমাদের সব অপারেশন প্ল্যান (ওপি) বন্ধ হয়ে গেছে। ইআরপিপি প্রকল্প বন্ধ হয়েছে গত
ডিসেম্বরে। কোন প্রজেক্ট মেয়াদ বাড়লে বা বিদেশী সাহায্য আসলে মেয়াদ বাড়ানো হয়। কিন্তু
সেটি হয়নি। আমরা তাদের বলে দিয়েছি চাকরি নেই। পাশাপাশি অর্থমন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি।
তবে মন্ত্রণালয় থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তারপরও তারা কর্মসূচি দিয়ে গেট বন্ধ করে
দিয়েছে। আমরা তাদের বুঝিয়ে বলেছি। এরপরও কঠোর অবস্থানে গেলে আমরাও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা
নিতে হবে।
