পারভেজ হত্যা : কারাগারে টিনা
মাস্টারমাইন্ড পিয়াস ও বান্ধবী ঐশি অধরা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ০৩:০৮ এএম
ফাতেমা তাহসিন ঐশি।
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাত্রদল কর্মী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যার মাস্টারমাইন্ড আবুজর গিফারী পিয়াস ও তার বান্ধবী ফাতেমা তাহসিন ঐশি। ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফারিহা হক টিনা রিমান্ডে পুলিশের কাছে এ তথ্য জানিয়েছে। এছাড়াও সে আরও বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। তদনে্তর স্বার্থে পুলিশ এখনই এসব তথ্য খোলাসা করছে না। তবে পিয়াস ও ঐশি এখনো অধরাই রয়ে গেছে। এছাড়া মামলার এজাহারে উলে্লখিত আরও চারজন এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।
তিন দিনের রিমান্ড শেষে সোমবার টিনাকে আদালতের মাধ্যমে
কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে ৯ এপ্রিল পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। বনানীতে প্রাইম এশিয়া
বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ ১৯
এপ্রিল নির্মমভাবে খুন হন। পরদিন নিহতের মামাতো ভাই হুমায়ুন কবির বনানী থানায় হত্যা
মামলা করেন। মামলায় মেহরাজ ইসলাম, আবুজর গিফারী পিয়াস, মাহাথির হাসান, সোবহান নিয়াজ
তুষার, হূদয় মিয়াজী, রিফাত, আলী ও ফাহিমের নাম উলে্লখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২৫-৩০
জনকে আসামি করা হয়।
এই মামলায় এ পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এর মধ্যে মামলার এজাহারে উলে্লখিত তিনজন মেহরাজ ইসলাম, মাহাথির হাসান ও হূদয় মিয়াজী
রয়েছেন। এছাড়া নানা তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে আল কামাল শেখ, আলভী হোসেন জুনায়েদ ও আল
আমিন সানিকে গ্রেফতার করা হয়। রিমান্ড ও জবানবন্দি প্রদান শেষে তারা এখন কারাগারে রয়েছেন।
যাদের কেন্দ্র করে পারভেজ হত্যা ঘটনার সূত্রপাত ইউনিভার্সিটি
অব স্কলার্সের ইংরেজি বিভাগের সেই দুই শিক্ষার্থী ফাতেমা তাহসিন ঐশি ও ফারিয়া হক টিনাকে
সম্প্রতি আইনের আওতায় নিতে নির্দেশ দেন আদালত। টিনাকে গ্রেফতার করা হলেও ঐশি ধরাছোঁয়ার
বাইরে। এছাড়া ঐশির বন্ধু আবুজর গিফারী পিয়াস। মামলার এজাহারভুক্ত অপর চার আসামি সোবহান
নিয়াজী তুষার, রিফাত, আলী ও ফাহিম এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।
তদন্তসংশি্লষ্ট সূত্রে জানা গেছে, টিনা জিজ্ঞাসাবাদে
পুলিশকে জানিয়েছে, ঐশিই প্রথম তার বন্ধু পিয়াসকে ফোন দিয়ে পারভেজকে শায়েস্তা করতে
বলে। বান্ধবীকে উত্ত্যক্ত করা হয়েছে জেনে পিয়াস বিশ্ববিদ্যালয় ও বাইরের দলবল নিয়ে এই
হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
এ ব্যাপারে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)
রাসেল সারোয়ার যুগান্তরকে বলেন, রিমান্ড শেষে টিনাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া
মামলার অপর আসামিদের গ্রেফতারে সর্বোচ্চ প্রচষ্টো অব্যাহত আছে।
১৯ এপ্রিল বিকালে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উলটো
দিকে একটি শিঙ্গারার দোকানে বসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় হাসাহাসি করছিলেন পারভেজ। তাদের
পেছনে বসেছিলেন ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই শিক্ষার্থী ফাতেমা তাহসিন ঐশি ও ফারিহা
হক টিনা। একপর্যায়ে ঐশি তার ছেলেবন্ধু প্রাইম এশিয়ার এলএলবির ছাত্র আবুজর গিফারী পিয়াসকে
ফোন করে অভিযোগ করেন, তাদের (ঐশি-টিনা) উদ্দেশ করে হাসাহাসি করা হচ্ছে। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের
ইংরেজি বিভাগের মাহাথীর ও বিবিএর মেহেরাজকে সঙ্গে নিয়ে পিয়াস ওই দোকানে যান। হাসাহাসির
প্রসঙ্গ নিয়ে পারভেজের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টি প্রাইম এশিয়ার প্রক্টরকে জানানো
হয়। প্রক্টর পারভেজকে ডেকে নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। পারভেজ ওই দুই শিক্ষার্থীর
কাছে ঘটনার জন্য ক্ষমাও চান। এর পরও পারভেজকে উচিত শিক্ষা দিতে পিয়াস তার বন্ধুদের
এবং কড়াইল বসি্তর কিশোর গ্যাং বেনসন গ্রুপের সদস্যদের ফোনে ডেকে আনেন। তারা এসে পারভেজ
ও তার বন্ধু তারিকুলকে মারধর করে। একপর্যায়ে তাদের ছুরিকাঘাতে মারা যান পারভেজ।
