Logo
Logo
×

রাজধানী

সেন্ট্রাল রোডে যুবককে প্রকাশ্যে কোপানোর ভিডিও ভাইরাল

Icon

ইমন রহমান

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৫, ১২:২১ এএম

সেন্ট্রাল রোডে যুবককে প্রকাশ্যে কোপানোর ভিডিও ভাইরাল

রাতে সড়কের পাশে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছেন দুই যুবক। হঠাৎ মোটরসাইকেলে আরও দুই যুবক এসে দাঁড়ালেন তাদের সামনে। মোটরসাইকেল স্ট্যান্ড করে মুহুর্তেই তিন যুবক মিলে দাড়িয়ে থাকা এক যুবককে মারপিট শুরু করলেন। তাদের মধ্যে পাঞ্জাবি ও হেলমেট পরা এক যুবক মাটিতে ফেলে চাকু দিয়ে উপর্যুপরি কোপাতে লাগলেন ওই যুবককে। 

কিছুসময় পর যখন নিস্তেজ হয়ে পড়েন ওই যুবক, তখন মোটরসাইকেলে সটকে পরেন হামলাকারী তিন যুবক। এসময় সড়কে থাকা অন্যরা দাড়িয়ে দেখছেন এই বিভৎসতা। 

দুই মিনিট ছয় সেকেন্ডের এমনই এক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।   

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে রোববার রাত ১২টার দিকে রাজধানীর নিউমার্কেট থানাধীন সেন্ট্রাল রোডে। হামলার শিকার যুবকের নাম সাইফ হোসেন মুন্না। তিনি কলাবাগান ওয়ার্ড বিএনপির কর্মী। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেওয়া হয়। পরে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পূর্নবাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু হাসপাতাল) এ ভর্তি করা হয়েছে। 

আহত সাইফ হোসেন মুন্নার দুই হাতে ১০ থেকে ১৫টি কোপ লেগেছে। এতে হাতের অধিকাংশ রগ কেটে গেছে বলে জানিয়েছেন স্বজনেরা।  

পুলিশ জানিয়েছে, বিএনপি ও যুবদলের আধিপত্যের জেরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। আহত মুন্না কলাবাগান থানা বিএনপির ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মইনুদ্দিন মইনের পক্ষের লোক। আর মুন্নাকে হামলার নেতৃত্ব দেওয়া এমসি শুভ কলাবাগান থানা যুবদলের কর্মী। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।

কলাবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলে আশিক যুগান্তরকে বলেন, ‘রাতেই আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ঘটনাস্থলটি নিউমার্কেট থানা এলাকায় পড়েছে। নিউমার্কেট থানা পুলিশসহ ঊর্ধ্বতন স্যারেরা এসেছিলেন। ভিক্টিমের সঙ্গেও হাসপাতালে আমরা কথা বলেছি। তাদেরকে থানায় অভিযোগ দিতে বলেছি। আমরা আইনগত সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছি। তারা এখনো থানায় অভিযোগ করেনি।’ 

তিনি বলেন, কারা এ হামলা করেছে তাদের প্রাথমিক তথ্য আমরা পেয়েছি। 

পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, কলাবাগান থানা এলাকায় বিএনপি ও যুবদল দুই গ্রুপে ভাগ হয়েছে। তাদের আধিপত্যের লড়াইয়ের জেরে এমন নৃশংস হামলা করা হয়েছে। 

নিউ মার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) তারিক লতিফ যুগান্তরকে বলেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা সবাই কলাবাগান থানা এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা, চাঁদাবাজ ও এলাকার নিয়ন্ত্রক। 

মারপিটের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে দুইটি গ্রুপ আছে। তাদের চাঁদাবাজি নিয়ে বিরোধ থেকে এ হামলা বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। এখনো কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসেনি। 

কলাবাগান থানা বিএনপির ১৬ নম্বর ওয়ার্ড এর সাধারণ সম্পাদক মাইনুদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, আহত মুন্না আমার রাজনীতি করে। মুন্নার ওপর হামলা করেছে যুবদলের এমসি শুভ। 

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, মুন্না বাসায় যাচ্ছিল। তখন মামুন নামের এক যুবক তাকে ডেকে বলে, ‘শুভ ভাই আসছে আপনি একটু আসেন’। এই কথা বলে শুভকে বাসার সামনে থেকে ডেকে আনে। পরে তারা তিনজন মিলে কুপিয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, এমসি শুভর নামে নানা অভিযোগ রয়েছে। মাদক ব্যবসা, অস্ত্রবাজিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। একমাস আগেও কলাবাগান থানা পুলিশের কাছে আটক করে। কিন্তু যুবদলের একটি অংশ মিছিল মিটিং করে থানা ঘেরাও করে তাকে ছাড়িয়ে আনে। 

বিরোধের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, মুন্না চাঁদাবাজি করার মতো ছেলে না। এলাকার আধিপত্য নিয়ে বিরোধ তৈরি হয়েছে। তারা (এমসি শুভ) নিজেদের হাইলাইটস করার জন্য এগুলো করছে। 

কোপানো ভিডিও

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম