Logo
Logo
×

রাজধানী

দুই পরীক্ষার্থীর কান্না

কলেজের অনিয়মে আমরা কেন পরীক্ষা দিতে পারলাম না?

Icon

উত্তরা পশ্চিম (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৫, ০৫:০৯ পিএম

কলেজের অনিয়মে আমরা কেন পরীক্ষা দিতে পারলাম না?

ভুক্তভোগী ছাত্র ইয়াসিন আরাফাত ও সাজ্জাদ হোসেন। ছবি: যুগান্তর

‘কলেজের ভুলে (অনিয়মে) আমরা কেন ভুগব? আমরা কেন পরীক্ষা দিতে পারলাম না? কলেজ কর্তৃপক্ষ বোর্ডের সঙ্গে বসে সমাধান করে আমাদের পরীক্ষা দিতে দিবে, এটাই স্বাভাবিক।’ 

পড়ালেখা করার পরও এইচএসসি পরীক্ষা দিতে না পেরে এভাবেই সাংবাদিকদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজধানীর উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজের মানবিক বিভাগের ভুক্তভোগী ছাত্র ইয়াসিন আরাফাত ও সাজ্জাদ হোসেন।

প্রবেশপত্র না পেয়ে সকালে নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজের সামনে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করে ইয়াছিন আরাফাত যুগান্তরকে বলেন, আমি থাকার কথা পরীক্ষার হলে, আমি এখানে কেন থাকব? এখন তারা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) আমার সঙ্গে যোগাযোগও করতে না। আমরা দুজন শিক্ষার্থী আছি, দুজনই রাষ্ট্রের কাছে এর বিচার চাই।

এ সময় অপর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আজ সকাল নয়টা পর্যন্ত এডমিট কার্ড দেওয়ার কথা বলে আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছিল। অথচ ১০টা পর্যন্ত আমরা কেন্দ্রে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম।

সাজ্জাদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি একজন নিয়মিত ছাত্র। আমি ক্লাস ক্যাপ্টেন, ক্লাস টপার। এই সমস্যা আরও ৩-৪ জনের হয়েছে। ওদেরটা ঠিক করা হইছে। শুধু আমাদের দুজনেরটা ঠিক করল না কেন?

কলেজ কর্তৃপক্ষ কিংবা প্রিন্সিপাল খোঁজ নেয়নি জানিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সাজ্জাদ বলেন, আমাদের প্রিন্সিপাল আমাদের খোঁজ নিতেও আসে নাই। উনারা চাইলে তো আমাদের আজকের পরীক্ষাটা নিতে পারতেন। প্রয়োজনে আমাদের খাতাগুলো আলাদা রাখত। সামনের দুদিনের ভেতর আমাদের সমস্যাটা কি উনারা সমাধানের জন্য কাজ করতে পারতেন না?

দুই শিক্ষার্থী আরও বলেন, আমরা তো ফরম ফিলাপের সময় টাকা দিছি। উনারা টাকা পাওয়ার হিসাবটা রাখতে পারল, তাহলে আমাদের হিসাবটা কেন রাখতে পারল না? আমরা এর বিচার চাই।

এদিকে, ভুক্তভোগী ওই দুই শিক্ষার্থীর কথা জানতে পেরে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে আসেন উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মহিদুল ইসলাম। 

তিনি বলেন, এ ঘটনা জানতে পেরে আমরাও খুব ব্যথিত। যেহেতু এটি একটি পরীক্ষাকেন্দ্র তাই আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সচেষ্ট রয়েছি। দুই শিক্ষার্থীর ঘটনায় অভিভাবকরা যদি অভিযোগ দেয়, তাহলে আইনি দিক থেকে আমরাও বিষয়টি দেখব।

অপরদিকে, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইভানা তালুকদারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি সাংবাদিকদের কল ধরেননি।

এ বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সভাপতি ও ডিএনসিসি অঞ্চল-১০ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে যুগান্তরকে তিনি বলেন, বিষয়টি গতকাল (বুধবার) রাতেই আমি জেনেছি। শিক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপে যে শিক্ষক দায়িত্বে ছিলেন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে কোন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে— জানতে চাইলে জড়িত শিক্ষকের নাম জানাতে পারেননি তিনি।

তিনি বলেন, ওই দুই শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে না পারার পেছনে যাদের গাফিলতি রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে যদি প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের গাফিলতি থাকে, তবে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম