Logo
Logo
×

অন্যান্য

রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে দেশে ফেরা ওমান প্রবাসীদের ৪ দফা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৫, ০৫:০০ পিএম

রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে দেশে ফেরা ওমান প্রবাসীদের ৪ দফা
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে চাকরি ও ব্যবসা হারিয়ে জোরপূর্বক প্রত্যাগত ও নির্যাতিত প্রবাসীদের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ৪ দফা দাবি জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে জোরপূর্বক প্রত্যাগত ওমান প্রবাসী ফোরাম নামে একটি সংগঠন। বিগত সরকারের আমলে বিভিন্ন সময়ে জোরপূর্বক প্রায় ২০০ বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠানোর অভিযোগ করে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে ওমান প্রত্যাগত প্রবাসী ডা. মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, আমি ওমানে ইবরা হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ ছিলাম। আমাকে ২০২১ সালের মার্চ মাসে নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে জোরপূর্বক পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আমার অপরাধ অভিভাবকদের ভোটে স্কুল পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত ছিলাম। আমাকে বাংলাদেশ স্কুলে মাস্কাট তথা বাংলাদেশের জিম্মাদার হয়ে জামিনযোগ্য মামলায় ২০২১ সালের ১০ জানুয়ারি গ্রেফতার করা হয়। আমার পক্ষে আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ দূতাবাস মাস্কাটের কোনো কর্মকর্তা এগিয়ে আসেননি। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় আমার পরিবার ও কমিউনিটির বন্ধুদের আমার পক্ষে জামিন আবেদন না করার কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় এবং মিথ্যা আশ্বাস ও তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াতে থাকে।

তিনি বলেন, পরে জানতে পারি দূতাবাসের কর্মকর্তারাই আমাকে গ্রেফতার করানোর প্লট তৈরি করেছিল। দীর্ঘ ২৩ দিন দুঃসহ হাজতবাসের সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত ওমানের রাষ্ট্রদূত শেখ তাইয়েব সালেম আল আলায়ি আমার জামিনের ব্যবস্থা করেন।

ওমান প্রত্যাগত আরেক প্রবাসী সলিম উল্লাহ বলেন, আমার অপরাধ আমি বাংলাদেশ স্কুল মাস্কাটের সংবিধান সংশোধনের জন্য অভিভাবকদের ওয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে লেখালেখি করছি। পরিবারসহ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত গোলাম সারোয়ারের সঙ্গে এমনকি দূতাবাসের যেকোনো কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও কেউ আমাকে দেখা দেয়নি। এখন আমি দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছি। এছাড়া আমি ওখানে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত ছিলাম। আমার লাখ লাখ টাকা ওমানে রেখে এসেছি।

ওমান থেকে জোরপূর্বক পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করে অন্য বক্তারা বলেন, বিগত সরকারের রোষাণলে পড়ে হাইকমিশনের চক্রান্তে আমাদেরকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আমরা ওমানের কোনো আইন লঙ্ঘন করলে একটা যুক্তি ছিল, কিন্ত আমরা কিছু করিনি। আমরা আওয়ামী লীগ করিনি, বিরোধী দলমতের কারণে কালো তালিকাভুক্ত করে আমাদেরকে দেশে পাঠিয়ে দেয়। ওমানে বাংলাদেশের দূতাবাস এখনো স্বৈরাচারের দোসর। আমরা ক্ষতিপূরণ চাই, এসব কর্মকর্তার শাস্তির দাবি জানাই।

সংবাদ সম্মেলনে চার দফা দাবি উপস্থাপন করে ওমান প্রত্যাগত প্রবাসী ডা. মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসর ও ওমান থেকে জোর পূর্বক বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর অন্যতম কারিগরদের ওমানে আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তফা কামাল, সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদার, বঙ্গবন্ধু পরিষদ সভাপতি জসিন উদ্দীন, বাংলাদেশ সোশ্যাল ক্লাবের সভাপতি সিরাজুল ইসলামসহ অন্যান্য ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ওমান থেকে চাকরি-ব্যবসা হারিয়ে জোরপূর্বক প্রত্যাগত ও নির্যাতিত প্রবাসীদের চাকরি এবং ব্যবসা ফিরিয়ে দিতে হবে।

রাষ্ট্রদূত সেকান্দার আলী, রাষ্ট্রদূত গোলাম সারোয়ার, রাষ্ট্রদূত মিজানুর রহমান, প্রথম সচিব আবু সাঈদ, দূতালয় প্রধান নাহিদ ইসলামসহ বাংলাদেশ দূতাবাস মাস্কাটে সে সময় কর্মরত ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসর ও অত্যাচারী কর্মকর্তাদের বিচার করতে হবে।

আগামী ২৯ জুলাইয়ের মধ্যে দেশে ওমান প্রবাসীদের প্রত্যাবর্তন রহিত করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা, প্রবাসীকল্যাণ উপদেষ্টার সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম