রক্ত দিতে বার্ন ইনস্টিটিউটে তৃতীয় লিঙ্গের ২ শতাধিক মানুষ
হাজারীবাগ (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২৫, ০৩:৫৮ পিএম
ছবি : যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় অধিকাংশ দগ্ধ ভর্তি রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। তাদের জন্য প্রয়োজন হচ্ছে রক্তের। এবার দগ্ধদের রক্ত দিতে বার্ন ইনস্টিটিউটে হাজির হয়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরা।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক
সার্জারি ইনস্টিটিউটের সামনে জড়ো হন প্রায় দুই শতাধিক তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। তারা স্বেচ্ছায় রক্ত দিতে এসেছেন বলে জানান।
মগবাজার, বনানী, উত্তরা, বিমানবন্দর সড়কসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে
ছুটে আসেন তারা। এ মানবিক উদ্যোগে নেতৃত্ব দেন মগবাজারের হায়দার ও উত্তরা এয়ারপোর্ট
এলাকার পিংকি শিকদার। উপস্থিত ছিলেন বনানীর ঝুমা, বেলুনি, মগবাজারের সজীব, হায়দারসহ
অনেকে।
তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি আঁচল বলেন, ‘এখানে যারা ভর্তি, তারা আমার ভাই-বোনের
মতো। আমিও এ দেশের মানুষ। যদি অন্যরা তাদের পাশে দাঁড়াতে পারে, তাহলে আমরা কেন পারবো
না? তাই আজ আমরা স্বেচ্ছায় রক্ত দিতে এসেছি।’
আচল আরও বলেন, ‘মানবিকতা কোনো পরিচয়ে থেমে থাকে না। আমরা চাই সমাজ বুঝুক,
আমরাও সংকটে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।’
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের লাল সবুজ সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবক
মাহফুজুর রহমান ফাহাদ বলেন, দগ্ধ রোগীদের প্রতি ২৪ ঘণ্টা পরপর রক্ত লাগে। ইতোমধ্যে
ঢাকাসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে স্বেচ্ছাসেবীরা এসে নাম ও ফোন নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রি
করেছেন। আজ যারা এসেছেন, তাদেরও তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে। প্রয়োজন হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা
করে তাদের রক্ত ব্যবহার করা হবে।
এদিকে, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে।
একই দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৬৫ জন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে জানায়, বিভিন্ন
হাসপাতালে নিহতের সংখ্যা আজ (২২ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত ৩১ জন দাঁড়িয়েছে। আর আহতের সংখ্যা
১৬৫ জন।
এর মধ্যে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে আহত ৮, নিহত নেই। জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক
সার্জারি ইনস্টিটিউটে আহত ৪৬, নিহত ১০। ঢাকা মেডিকেলে আহত ৩, নিহত ১। ঢাকা সিএমএইচে
আহত ২৮, নিহত ১৬। উত্তরা লুবনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে আহত ১৩,
নিহত ২।
উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে আহত ৬০, নিহত ১। উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে
আহত একজন, নিহত নেই। শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত একজন, নিহত নেই। ইউনাইটেড
হাসপাতালে আহত দুজন, নিহত ১ এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে আহত তিনজন এবং সেখানে
কোনো নিহত নেই।
