Logo
Logo
×

কর্পোরেট নিউজ

ম্যাগাজিন ‘অআকথ’ এর প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:২২ পিএম

ম্যাগাজিন ‘অআকথ’ এর প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশের সাহিত্য পত্রিকার সংস্কৃতি, সম্ভাবনা, সংকট ও উত্তরণের পথ নিয়ে এক আলোচনা সভা এবং সাহিত্য–সংস্কৃতিবিষয়ক ম্যাগাজিন ‘অআকথ’-এর প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টায় বাংলা একাডেমির আল মাহমুদ লেখক কর্নারে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক আফসানা বেগম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। আলোচনায় অংশ নেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহারসহ দেশের বিভিন্ন লেখক, সম্পাদক ও সংস্কৃতিকর্মীরা।

অনুষ্ঠানে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক আফসানা বেগম বলেন, সাহিত্য পত্রিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম। লেখক, পাঠক, সম্পাদক ও মুদ্রণ—এই পুরো প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সাহিত্য চর্চা এগিয়ে যায়। সংকট থাকবেই, তবে সম্ভাবনাও আছে। আমাদের সংকট নয়, সম্ভাবনার দিকেই বেশি মনোযোগ দিতে হবে।  

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, বাংলা সাহিত্যের ম্যাগাজিন কালচার অত্যন্ত পুরোনো ও সমৃদ্ধ। একসময় ঢাকা মফস্বল হলেও এখান থেকে বহু গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছে। সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে না পারা কিংবা প্রয়োজনীয়তা হারানোর কারণেও অনেক ম্যাগাজিন বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে কাগজের বই হয়তো শৌখিন বস্তুতে পরিণত হতে পারে। তবে অনলাইন ও অফলাইন—দুই মাধ্যমে সমানভাবে কাজ করে ‘অআকথ’ যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা প্রশংসনীয়। সাহিত্য পত্রিকাকে একটি প্রোডাক্ট হিসেবেও ভাবতে হবে, যেখানে পাঠকের সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ তৈরি করা জরুরি।

কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেন, সাহিত্যের প্রধান কাজ হলো সম্পর্ক স্থাপন করা। প্রযুক্তির যুগে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার হবে, তবে মুখোমুখি বসে সরাসরি সাহিত্য চর্চাও অব্যাহত রাখতে হবে। সাহিত্য শুধু বিনোদন নয়, এটি একটি গুরুতর ও শক্তিশালী মাধ্যম। ডিজিটাল যুগে সাহিত্যের ধারাকে আধুনিক হতে হবে, তবে সরাসরি আলোচনার জায়গাটিও ধরে রাখতে হবে। তিনি বলেন, অনলাইন ও অফলাইনে সাহিত্য চর্চা অব্যাহত রাখার মাধ্যমে ‘অআকথ’ আশাব্যঞ্জক ভূমিকা রাখছে।

আলোচনায় বক্তারা বলেন, একসময় লিটল ম্যাগাজিন ও সাহিত্য সাময়িকীগুলো ছিল সামাজিক পরিবর্তন ও বিপ্লবের হাতিয়ার। প্রেম, ভ্রাতৃত্ব ও দ্রোহের ভাষা প্রথম উঠে আসত এসব সাহিত্য পত্রিকায়। আজ প্রযুক্তির অগ্রগতিতে বই ই-বুকে রূপ নিচ্ছে, পত্রিকাগুলো ঝুঁকছে অনলাইনে। তবে সাদা কাগজে কালো অক্ষরের আবেদন এখনো পুরোপুরি হারিয়ে যায়নি।

তিন বছরের ধারাবাহিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের অভিজ্ঞতা থেকে সাহিত্য সাময়িকীর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেই ‘অআকথ’-এর এই মুদ্রিত সংস্করণের আত্মপ্রকাশ বলে জানান আয়োজকেরা।

উল্লেখ্য, ‘অআকথ’ বিগত তিন বছর ধরে সাহিত্য, সংস্কৃতি ও মননচর্চাভিত্তিক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। অমর একুশে বইমেলায় ভিন্নধর্মী স্টল হিসেবে এটি পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। পাশাপাশি ফেসবুক, ইউটিউব ও নিজস্ব ওয়েবসাইটে নিয়মিত সাহিত্যভিত্তিক কনটেন্ট প্রকাশের পাশাপাশি জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে পাঠচক্র আয়োজন করে আসছে। এবার প্রথমবারের মতো একটি মুদ্রিত সাহিত্য পত্রিকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল ‘অআকথ’।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম