Logo
Logo
×

সারাদেশ

কুমিল্লায় মা-মেয়েকে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ

Icon

কুমিল্লা ব্যুরো

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৬ পিএম

কুমিল্লায় মা-মেয়েকে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ

নিহত মা ও মেয়ে। গ্রেফতার কবিরাজ। ছবি: যুগান্তর

কুমিল্লায় জিন তাড়াতে এসে ধর্ষণচেষ্টা। এতে ব্যর্থ হয়ে মা ও মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে কবিরাজ। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন (২৩) ও তার মা তাহমিনা বেগমের (৫২) হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে এ তথ্য পেয়েছে ডিবি পুলিশ। 
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) ভোরে নগরীর ধর্মপুর এলাকা থেকে কবিরাজ মোবারক হোসেনকে (২৯) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরপর হত্যার রহস্য উদঘাটিত হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে কুমিল্লার পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। 
গ্রেফতার মোবারক হোসেন জেলার দেবিদ্বার উপজেলার কালিকাপুর এলাকার মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে। তিনি নগরীর বাবুস সালাম জামে মসজিদের খাদেম। পাশাপাশি কবিরাজি করেন। 
নিহতরা হলেন- কুমিল্লা নগরীর সুজানগর এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের স্ত্রী তাহমিনা বেগম এবং তার মেয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন। এ ঘটনায় নিহত তাহমিনার বড় ছেলে তাজুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ সুপার জানান, নিহত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিনের মা তাহমিনা বেগম নগরীর বাবুস সালাম জামে মসজিদের খতিব ইলিয়াস হুজুরের কাছে মাঝেমধ্যে ঝাঁড়ফুকের জন্য যেতেন। সেখানে পরিচয় হয় ওই মসজিদের খাদেম মোবারকের সঙ্গে। মোবারক নিজেও কবিরাজি করেন বলে তাহমিনাকে জানান তিনি। ওই সূত্র ধরে গত একমাস ধরে তাহমিনাদের বাসায় যাতায়াত ছিল মোবারকের। রোববার তাহমিনা বেগম তার মেয়ের জ্বীন তাড়ানোর জন্য কবিরাজ মোবারককে বাসায় ডাকেন। এ সময় মেয়ে সুমাইয়া আফরিনের কক্ষে জ্বীন তাড়ানোর জন্য যান মোবারক। 
একপর্যায়ে কবিরাজ মোবারক সুমাইয়াকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে মা তাহমিনা বেগম টের পেয়ে তার মেয়েকে বাঁচাতে যান। এ সময় মোবারক সুমাইয়াকে তার কক্ষে আটকে রেখে সুমাইয়ার মা তাহমিনাকে তার কক্ষে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে সুমাইয়া আফরিনের কক্ষে গিয়ে তাকেও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তাদের বাসায় থাকা চারটি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ নিয়ে পালিয়ে যান। 
পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান আরও জানান, ঘটনার পর পুলিশের একাধিক ইউনিট ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে। ঘটনাস্থলের পাশের একটি স্কুলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে মূলহোতা মোবারককে শনাক্ত করা হয়। ঘটনার পর আত্মগোপনে চলে যাওয়া কবিরাজ মোবারক সোমবার রাতে ট্রেনে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। এ সময় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে নগরীর ধর্মপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ সুপার বলেন, প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ড দুটি একজনই সংগঠিত করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়েছে। তবে আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে। আর কেউ জড়িত থাকলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে। গ্রেফতার মোবারককে আদালতে তোলার প্রক্রিয়া চলছে। 
প্রসঙ্গত, সোমবার ভোরে কুমিল্লা নগরীর কালিয়াজুড়ি এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে মা এবং মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম