বাড়ি ছাড়তে জোর করে মুচলেকা নেওয়ার অভিযোগ ওসির বিরুদ্ধে
যুগান্তর প্রতিবেদন, মানিকগঞ্জ
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:১৭ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে জমি নিয়ে পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে থানার ওসির বিরুদ্ধে ভয়ভীতি দেখানো, হুমকি ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার বিকালে নালী ধুতরাবাড়ি এলাকায় নালী-পাটুরিয়া সড়কে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে স্থানীয় মাতুব্বর আয়ুব তালুকদার, ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলামসহ এলাকাবাসী বক্তব্য দেন।
বক্তারা অভিযোগ করেন, বসতবাড়ির জমি নিয়ে রফিকুল ইসলামের বড় ভাইয়ের স্ত্রী সালমা আক্তার থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ করেন। অথচ অভিযোগ যাচাই না করেই রফিকুল ইসলামকে ৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় থানার এসআই নুরুল ইসলাম থানায় ডেকে আনেন।
সেখানে ওসি তার কোনো কথা শোনার প্রয়োজন মনে না করে সরাসরি নির্দেশ দেন ‘পৈতৃক ভিটেমাটি ছেড়ে চলে যেতে হবে।’ আপত্তি জানালে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দিয়ে তাকে হাজতে আটকে রাখা হয়।
গভীর রাতে জোরপূর্বক একটি মুচলেকায় সই করিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হলেও শর্ত ছিল— ৯ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টার মধ্যে বাড়ি ছাড়তে হবে। না হলে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হাত-পা ভেঙে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন ওসি।
ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের দুটি রায় আমাদের পক্ষে থাকা সত্ত্বেও সালমা আক্তার মিথ্যা অভিযোগ দেন। থানায় গেলে আমাকে ওসির কক্ষে নিয়ে ধমক-চড়াও করে হাজতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। গভীর রাতে মুচলেকা স্বাক্ষর নিতে বাধ্য করেন। ওসি হুমকি দেন-যদি জমি না ছাড়ি তবে একের পর এক মামলা দিয়ে আমাকে জেলে পাঠানো হবে, হাত-পা ভেঙে দেওয়া হবে।
তিনি জানান, রাতে ছাড়া পাওয়ার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। পরদিন সকালে শিবালয় থানার ওসির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ নিয়ে মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হন।
মানববন্ধনে স্থানীয় মাতুব্বর আয়ুব তালুকদার বলেন, সকালে রফিকুল ছাদে উঠে মাইকে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ এবং ঘোষণা দেন মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তিনি নিচে নামবেন না। পরে এলাকাবাসী আশ্বাস দিলে তিনি নেমে আসেন। মুহূর্তেই এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়ভাবে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করে।
শিবালয় থানার ওসি কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ৭ সেপ্টেম্বর জমিসংক্রান্ত বিষয়ে সালমা আক্তার অভিযোগ করেন। পরদিন এসআই নুরুল ইসলাম তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান। এরপর অভিযুক্ত রফিকুলকে থানায় ডাকা হয়। রাতেই অভিযোগকারী পারিবারিকভাবে মীমাংসার কথা জানিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন। পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা ও বানোয়াট।
