বাবাকে পিটিয়ে হত্যার পর মাটিচাপা দিল দুই রোহিঙ্গা ছেলে
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:১৯ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নে পারিবারিক কলহের জেরে এক রোহিঙ্গা পিতাকে পিটিয়ে হত্যা করে লাশ বস্তায় ভরে মাটিচাপা দিয়েছে দুই ছেলে। হৃদয়বিদারক এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের ছেলে মোহাম্মদ রফিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ ছৈয়দ (৫০)। কয়েক বছর আগে তিনি উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে এসে পরিবার নিয়ে খুরুশকুল ইউনিয়নের দক্ষিণ ডেইলপাড়া কুরিমারিয়ারছড়া এলাকায় বসবাস শুরু করেন।
পুরো পরিবারটিই রোহিঙ্গা নাগরিক হিসেবে পরিচিত। পরিবারের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বই এ হত্যার কারণ বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, নিহত ছৈয়দের সঙ্গে তার স্ত্রী ও ছেলেদের প্রায়ই কলহ লেগেই থাকত। সোমবার ভোরেও এমন এক কলহ রক্তাক্ত পরিণতির দিকে গড়ায়।
গ্রেফতার রফিকের স্ত্রী শারমিন আক্তার জানান, সোমবার ভোরে নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরেন ছৈয়দ। তখন স্ত্রীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে ছেলে রফিকও ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়েন। এতে উত্তেজিত হয়ে রফিক লাঠি দিয়ে বাবাকে আঘাত করেন। আঘাতের তীব্রতায় ঘটনাস্থলেই মারা যান ছৈয়দ।
পরিবারের সদস্যরা প্রথমে লাশ গোপন রাখার চেষ্টা করেন। রাতের আঁধারে নিহতের স্ত্রী ও দুই ছেলে রফিক ও সাহাবউদ্দিন জিয়া লাশ বস্তাবন্দি করে বসতভিটার পাশে ধানখেতে মাটিচাপা দেন। পরদিন সকালে তারা সবাই পালিয়ে আত্মগোপনে চলে যান।
ঘটনার প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এলাকার লোকজন হত্যাকাণ্ড টের পান। নিহতের বাড়ির আশপাশ থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। ধানখেতের পাশে সদ্য চাপা দেওয়া মাটির নিচ থেকে বেরিয়ে থাকা একটি শার্ট তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এ সময় তারা ৯৯৯-এ ফোন করে খবর দেন। পরে পুলিশ রাত ৯টার দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় মাটি খুঁড়ে বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে।
কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াছ খান যুগান্তরকে জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের ছেলে রফিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পারিবারিক কলহ থেকেই হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার পর জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
