|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ফরিদপুরের সদরপুরে মাত্র ১০ টাকায় ইলিশ মাছ বিতরণের ঘোষণা দিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী মাওলানা রায়হান জামিল। ইলিশের তুলনায় উপস্থিত জনসংখ্যা প্রায় তিনগুণ হওয়ায় সস্তায় মাছ নিতে আসা মানুষের মধ্যে তুমুল হট্টগোল শুরু হয়।
একপর্যায়ে জনতার চাপের কারণে তিনি ইলিশ বিতরণ বন্ধ করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।
বুধবার বেলা ১১টায় উপজেলার বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ ইলিশ বিতরণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
মুফতি রায়হান জামিল আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, মাত্র ১০ টাকায় ইলিশ বিতরণের খবর শুনে বিভিন্ন গ্রাম থেকে শত-শত মানুষ মাঠে উপস্থিত হন; কিন্তু পর্যাপ্ত ইলিশ না থাকায় উপস্থিত জনতার মধ্যে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে জনতার চাপে তিনি ইলিশ রেখেই দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। পরে ভাষণচর ইউনিয়ন এলাকায় পৌঁছলে ক্ষুব্ধ জনতা তার গাড়ি আটকে দেন। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে স্থানীয়দের সহায়তায় কোনোমতে তিনি নিরাপদে সেখান থেকে চলে যান।
স্থানীয় বাসিন্দা জব্বার শেখ বলেন, ‘মাত্র ১০ টাকায় ইলিশ মাছ পাবার খবর শুনে সকালে স্কুল মাঠে এসে দাঁড়িয়েছিলাম; কিন্তু মাছের চেয়ে মানুষ অনেক বেশি। তাই মাছ না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হলো।’
আকলিমা বেগম নামে এক নারী বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। দশ টাকায় ইলিশ মাছ পাবার খবর শুনে সকাল থেকে রোদে দাঁড়িয়ে থাকি। মানুষের ধাক্কাধাক্কিতে মাছ না নিয়েই ফিরতে হলো।’
স্থানীয় বাসিন্দা মো. টিটু জানান, মুফতি রায়হান জামিল ৬শ পিচ ইলিশ মাছ (সাড়ে চার মণ) বিতরণের জন্য আনেন, কিন্তু উপস্থিত মানুষ ছিল প্রায় দুই হাজার। ফলে অনেকে ইলিশ না পেয়ে হট্টগোল শুরু হয়।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ইলিশ বিতরণ করা মানুষের জন্য আমরা আগে টোকেন দিয়েছিলাম। কিন্তু টোকেনপ্রাপ্ত ব্যক্তি সঙ্গে করে অন্য মানুষ নিয়ে আসায় শৃঙ্খলভাবে ইলিশ বিতরণে বিঘ্ন ঘটে।
ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুফতি রায়হান জামিল বলেন, ‘আমি মানুষের উপকারের চেষ্টা করি। তাই ইলিশ বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছিলাম; কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিত ভিড় ও বিশৃঙ্খলার কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। নিরাপত্তার কারণে আমাকে দ্রুত সেখান থেকে সরে আসতে হয়েছে।’
সদরপুর থানার পরিদর্শক (ওসি) সুকদেব রায় বলেন, ‘এ ধরনের বিষয় সম্পর্কে আগেই সতর্ক করা হয়েছিল; কিন্তু তিনি নিজের ইচ্ছামতো ইলিশ বিতরণ কার্যক্রম চালান। পরে বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে, তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’
