কুমিল্লায় মাজারে হামলা, ২২শ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা
কুমিল্লা উত্তর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:২২ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কুমিল্লার হোমনা উপজেলার আছাদপুর গ্রামের কফিলউদ্দিন শাহ-এর মাজার পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ২২শ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে হোমনা থানার এসআই তাপস কুমার সরকার বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, এলাকায় এখন থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একটি ফেসবুক আইডি থেকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করে এক যুবক স্ট্যাটাস দেন। এ ঘটনায় স্থানীয় ক্ষুব্ধ জনতা থানার সামনে জড়ো হয়ে ওই যুবকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করেন। দুপুরের দিকে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ইসলামী যুব সেনা হোমনা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে হোমনা থানায় একটি মামলা করেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
এদিকে ফেসবুকের ওই পোস্টকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এলাকার বিক্ষুব্ধ লোকজন জড়ো হয়ে আছাদপুর গ্রামের কফিল উদ্দিন শাহ ও হাওয়ালি শাহ মাজারে আগুন এবং কালাই শাহ ও আবদু শাহ মাজারে হামলা-ভাঙচুর করে। ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে শুক্রবার সকালে সরেজমিনে আছাদপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় মামলা ও গ্রেফতার আতঙ্কে এলাকা অনেকটা পুরুষ শূন্য। পুড়ে যাওয়া মাজারের সামনে কথা হয় গ্রেফতার যুবকের মায়ের সঙ্গে। তিনি বলেন, ছেলেকে তো পুলিশের হাতে তুলে দিলাম। এরপরও আমাদের মাজার ও বাসা বাড়িতে কেন আগুন দেওয়া হলো। পুলিশ কোনো নিরাপত্তা দিতে পারলো না কেন? এক কাপড়ে ঘর থেকে বের হতে পারলেও টাকা পয়সা, স্বর্ণালংকারসহ কোনো মালামাল রক্ষা করতে পারিনি। জীবনটা কোনোমতে রক্ষা করেছি।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের জানান, ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু আইন হাতে তুলে নিয়ে যারা উসকানি দিয়ে মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

