উৎসবের আমেজে সম্মেলন, কিশোরগঞ্জে পুরোনোদের বিপুল বিজয়
কিশোরগঞ্জ ব্যুরো
প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৩২ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
দীর্ঘ নয় বছর পর এবার উৎসবমুখর পরিবেশে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোটাভুটিতে পুরোনো নেতৃত্বেরই বিপুল বিজয় হয়েছে। তবে ফলাফলের জন্য রাত ৩টা পর্যন্ত ব্যাপক কৌতূহল নিয়ে সম্মেলন স্থল ও আশপাশের এলাকায় অপেক্ষমাণ ছিলেন হাজার হাজার কাউন্সিলর এবং কর্মী-সমর্থক।
অনেক নাটকীয়তা শেষে ভোট গণনা করে সাবেক সভাপতি বিশিষ্ট শিল্পপতি ত্যাগী ও পরীক্ষিত রাজনৈতিক মো. শরীফুল আলমকে সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মাজহারুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
জানা গেছে, ২০ সেপ্টেম্বর দুপুরে শহরের ঐতিহাসিক পুরোনো স্টেডিয়ামে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে এ সম্মেলনের উদ্বোধন হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলে। দিবাগত রাত ৩টার দিকে আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
এ ফলাফল অনুযায়ী সভাপতি পদে ‘আনারস’ প্রতীকে শরীফুল আলম ১ হাজার ৫২২ ভোটে নির্বাচিত হন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী সহ-সভাপতি রুহুল হোসাইন ‘ছাতা’ প্রতীকে পান ১৯৭ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে ‘রিকশা’ প্রতীকে মাজহারুল ইসলাম পান ১ হাজার ১৫৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল ‘বল’ প্রতীকে পান ৬১১ ভোট। অন্য দুই প্রার্থী শফিকুল আলম রাজন (মাছ প্রতীক) পান ৩০ ভোট ও আইনজীবী সাজ্জাদুল হক (গোলাপফুল প্রতীক) পান ৭ ভোট।
নির্বাচনে মোট ২ হাজার ৯০ কাউন্সিলরের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন ১ হাজার ৮৪০ জন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে সর্বশেষ কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন হলেও কমিটি সঙ্গে সঙ্গে ঘোষণা করা যায়নি। পরে কেন্দ্র থেকে শরীফুল আলমকে সভাপতি ও মাজহারুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই তিন বছরের কমিটি দিয়েই চলেছে আন্দোলন-সংগ্রামের টালমাটাল ৯ বছর।
কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির এ সম্মেলন ঘিরে শনিবার সকাল থেকেই শহরে উৎসবের আমেজ ছিল। ঢাকঢোল-বাদ্য বাজিয়ে, ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা নিয়ে বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে স্লোগানে স্লোগানে শহর কাঁপিয়ে এসে সম্মেলনে যোগ দেন। এজন্য স্টেশন রোডে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যান চলাচল প্রায় বন্ধ থাকে।
ভোট গণনার একপর্যায়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থী সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল তিনটি ব্যালট বাক্স সরানোর অভিযোগ তুলেন। তার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে একাত্ম হয়ে কথা বলেন সভাপতি প্রার্থী মো. রুহুল হোসাইনও। এসব কারণে অনেকটা বিলম্বিত হয় ভোটগ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশ প্রক্রিয়া। অবশেষে সামগ্রিক পরিবেশ বিবেচনায় এসবকে মেনে নিলে ভোট গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশ প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হয়।
রাত ৩টার দিকে ফলাফল প্রকাশের পর নবনির্বাচিত সভাপতি শরীফুল আলম বলেন, কাউন্সিলররা আমার প্রতি আস্থা রেখেছেন। আমি কৃতজ্ঞ।
অপরদিকে নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম দলের নেতাকর্মীদের সহযোগিতা চেয়েছেন দায়িত্ব পালনে।
এ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আইনজীবী মো. মিজানুর রহমান, আমিনুল ইসলাম ও মো. শরীফুল ইসলাম।
