Logo
Logo
×

সারাদেশ

রাজশাহীতে প্রকৌশলী হারুনকে প্রত্যাহারের দাবি

Icon

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:০৫ পিএম

রাজশাহীতে প্রকৌশলী হারুনকে প্রত্যাহারের দাবি

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদকে দুর্নীতিবাজ এবং ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর উল্লেখ করে রাজশাহী থেকে দ্রুত প্রত্যাহার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। 

রাজশাহী ঠিকাদার সমিতির ব্যানারে সোমবার বেলা ১১টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধন শেষে বিভাগীয় কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি দেন ক্ষতিগ্রস্ত ঠিকাদাররা। 

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর। তিনি জনস্বাস্থ্য কার্যালয়কে জিম্মি করে রেখেছেন। গোপনে দরপত্রের রেট ফাঁস করে এখনো আওয়ামী লীগের ঠিকাদারদের কাজ দিচ্ছেন তিনি। 

ঠিকাদারদের বিল আটকে অনৈতিক সুবিধা আদায় করেন। হারুন অফিস সময়কে তোয়াক্কা করেন না। রাতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তার বাসভবনে ডেকে নেন। সেখানে গভীর রাত অবধি কাজ করতে বাধ্য করেন। কখনো অফিসে এলে পোষা কুকুর নিয়ে ঢোকেন। সেই কুকুরের ভয়ে তটস্থ থাকেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বক্তারা বলেন, হারুন অর রশিদ ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে নিজের লোকজনকে কয়েকশ কোটি টাকার কাজ দিয়ে অঢেল অর্থ হাতিয়েছেন। চলতি বছরের মার্চে গোপন রেট জানিয়ে দিয়ে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নেতা কামাল হোসেনের প্রতিষ্ঠান মেসার্স মনির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেডকে ১১ কোটি টাকার ১০টি গ্রুপের ১০টি কাজই দিয়েছেন তিনি। 

ঠিকাদাররা বলেন, অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করলে প্রকৌশলী হারুন তাদের কাজ বন্ধ করে দেন। এমনকি প্রভাবশালী মহলের নামে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। আমরা নিয়ম মেনে কাজ করতে চাই। কোনো অনৈতিক সুবিধা চাই না। অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে সঠিকভাবে কাজের সুযোগ পাচ্ছি না। তদন্ত করলে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।

এদিকে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে দেওয়া স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, হারুন অর রশিদ দীর্ঘসময় বিল আটকিয়ে ঠিকাদারদের হয়রানি করেন। এরপর তিনি ঠিকাদারদের চেক দেওয়ার সময় বিলের এক শতাংশ উৎকোচ দিতে বাধ্য করেন। এ কারণে তিনি ইতোমধ্যে ‘মিস্টার ওয়ান পারসেন্ট’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। 

হারুন জামানতের টাকা ফেরত দিতে নানা কৌশলের আশ্রয় নেন। এরপর টাকা ছাড়ের জন্য মোটা অঙ্কের অনৈতিক সুবিধা নেন। ওই টাকা জনস্বাস্থ্য কার্যালয়ের এস্টিমেটর উম্মে সালমার স্বামী রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ গুড়িপাড়া চালনা সাকো এলাকার বাসিন্দা মামুনের ব্যাংক হিসাবে জমা হয়।

আন্দোলনকারীরা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে প্রকৌশলী হারুনকে দ্রুত রাজশাহী থেকে বদলি এবং তার দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। 

মানববন্ধন এবং স্মারকলিপি দেওয়ার সময় ঠিকাদার তারেক, ফিরোজ, হিমেল, শাহীন, সজিব, রবিন, শাকিল ও ফরহাদসহ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের অন্য ঠিকাদাররা উপস্থিত ছিলেন। 

অভিযোগের ব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ বলেন, আমি আজকেও অফিসে আছি। নিয়মিত অফিস করি। এ অভিযোগ বানোয়াট। আমি আওয়ামী লীগের দোসর না। দলমত নির্বিশেষে বিধি মেনেই টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। আমি ঠিকাদারদের তিন কোটি টাকা ওভার পেমেন্ট (বেশি) নেওয়ার বিষয়টি ধরে ফেলার কারণে ঠিকাদাররা সুপরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছেন।

২৩ সেপ্টেম্বর দৈনিক যুগান্তরে ‘উপদেষ্টাকে ঠিকাদারদের চিঠি, প্রকৌশলী হারুনের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে তোলপাড় শুরু হয়।                                                                                                                                                                                                                                                                                                                     


Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম