গাজীপুরে পুনর্বাসনকেন্দ্র
পূজায় পরিবারের সঙ্গে না থাকার আক্ষেপ
মোহাম্মদ মোরশেদ আলম, গাজীপুর
প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৩০ এএম
গিভেন্সি গ্রুপের বয়স্ক পুনর্বাসনকেন্দ্রে ঠাঁই হয়েছে এই বৃদ্ধাদের।
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
গাজীপুর সদর উপজেলার মনিপুরের বিশিয়া কুড়িবাড়ীতে গিভেন্সি গ্রুপের বয়স্ক পুনর্বাসনকেন্দ্রে ঠাঁই হয়েছে ১৩১ জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধার। এর মধ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বী ১২ জন (৯ জন নারী, ৩ জন পুরুষ)। চারদিকে যখন দুর্গাপূজার আনন্দ, তখন তাদের মুখে আনন্দ নেই। এ সময়টি নাতি-নাতনি আর ছেলে-মেয়ের সঙ্গে কাটানোর কথা। কিন্তু তা না হয়ে বৃদ্ধাশ্রমে ঠাঁই হয়েছে তাদের। এই প্রতিষ্ঠানকেই নতুন সংসার মেনে নিয়েছেন। এখানকার মতো করেই পূজা উপভোগ করতে অভ্যস্ত তারা। সনাতন ধর্মাবলম্বী এসব প্রবীণের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। এ সময় তারা সোনালি অতীতের নানা স্মৃতি তুলে ধরেন। কথা বলার সময় চোখ থেকে পড়া অশ্রু মুছে নেন আঁচল দিয়ে।
কয়েকজন বৃদ্ধা জানান, বাবার বাড়িতে ধুমধাম করে দুর্গাপূজা হতো। তখন কত ব্যস্ত থাকতে হতো। বাড়িঘর ঝাড়পোঁছ, অতিথি আপ্যায়ন, পূজার সাজগোজ, বান্ধবীদের সঙ্গে মণ্ডপে মণ্ডপে ঘোরাঘুরি, প্রসাদ খাওয়া-আরও কত কী!
তারা জানান, এখানে থেকেই শারদীয় পূজা উপভোগ করেন তারা। প্রতিবছরই কর্তৃপক্ষ পূজা দেখতে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে। প্রতিষ্ঠানের গাড়িতে পূজা দেখতে যান তারা। তারপরও পরিবারের সঙ্গে পূজা করতে না পারার আক্ষেপটা থেকে যায়।
অনিমা চৌধুরী নামে একজন বলেন, বাড়িতে দুর্গাপূজায় কত আনন্দ হইত। মোসলমানরাও আইত। সবাই দেখত, খানা খাইত।
মুন্সীগঞ্জের হরিসাধন দে বলেন, পূজায় চান্দা দেওয়া, তোলা, হই-হুল্লোড়-এসব খুব মনে পড়ে। সেই আনন্দ কি এখন পাওয়া সম্ভব। এখন সেগুলো শুধুই স্মৃতি।
পুনর্বাসন কেন্দ্রটির সহকারী সুপার মীম আক্তার সুমা বলেন, প্রতিটি বৃদ্ধাশ্রমে অসংখ্য গল্প লুকিয়ে থাকে। কেউ স্বেচ্ছায় এখানে এসেছেন। তবে বেশির ভাগই পরিস্থিতির শিকার হয়ে এসেছেন। অনেকেই সন্তানদের অবহেলার শিকার। আমাদের এখানে পূজায় নতুন পোশাক দেওয়া হয়। দশমীর দিনে গাড়িতে বিভিন্ন মণ্ডপে নিয়ে যাওয়া হয় পূজা দেখাতে। ভালো খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়।

