পুত্রবধূকে ধর্ষণ ও হত্যায় অভিযুক্ত শ্বশুর, স্বামী গ্রেফতার
রংপুর ব্যুরো
প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১০:২০ পিএম
প্রতীকী ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রংপুরে শ্বশুর কর্তৃক পুত্রবধূকে যৌন হয়রানি ও হত্যার অভিযোগে করা মামলায় গৃহবধূর স্বামী সোহান মিয়াকে (৩০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাকে পঞ্চগর জেলার সদর থানার মিলগেট এলাকা থেকে শুক্রবার গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক ছিল।
শনিবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (অপরাধ) তোফায়েল আহমেদ এ বিষয়ে জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলন ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, সাড়ে তিন বছর আগে বদরগঞ্জ থানার নাটারাম এলাকার মেনাজুল হকের মেয়ে মিতু আক্তার (২২)। তার সঙ্গে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানার বালাপাড়া গ্রামের রাজা মিয়ার ছেলে সোহান মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ১০ মাসের একটি ছেলে রয়েছে।
বিয়ের পর থেকে পুত্রবধূ মিতু আক্তারের উপর শ্বশুর রাজা মিয়ার কুনজর পরে। বাড়িতে একা পেলেই শ্বশুর রাজা মিয়া মিতু আক্তারকে যৌন নিপীড়ন করত।
শ্বশুরের লালসার শিকার ভুক্তভোগী মিতু তার স্বামী সোহানসহ পরিবারের অন্যদের জানালেও তারা কোনো প্রতিকার করেনি। বরং এই ঘটনার কথা কাউকে না বলার জন্য হত্যাসহ বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়।
ভুক্তভোগী মিতু আক্তার অতিষ্ঠ হয়ে শ্বশুরের যৌন হয়রানির ঘটনা গোপনে মোবাইল ফোনে ভিডিও করে। সেই ভিডিও তার ভাইয়ের কাছে পাঠিয়ে দেন। এ বিষয়টি জানাজানি হলে গৃহবধু মিতুর ওপর নির্যাতন বেড়ে যায়।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ১০ টার দিকে ভুক্তভোগীর পরিবারকে মোবাইল ফোনে জানায়, মিতু গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে পরিবারের লোকজন এসে দেখে লাশ খাটিয়াতে রাখা হয়েছে এবং গলায় ফাঁস দেওয়ার কোনো চিহ্ন নেই।
মিতুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে নিহত গৃহবধূর পরিবার। ঘটনার পর থেকে নিহত মিতু আক্তারের শ্বশুর, স্বামী ও শাশুড়ি পলাতক ছিল।
এ ঘটনায় নিহত মিতুর বাবা মেনাজুল হক গত ১ অক্টোবর রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানায় ৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
এদিকে রংপুরে শ্বশুর কর্তৃক যৌন লালসার শিকার গৃহবধূ হত্যার সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন, সড়ক অবরোধ করে নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী। এরপরই গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সোহানকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (অপরাধ) তোফায়েল আহমেদ বলেন, গ্রেফতার সোহানকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে আদালতে পাঠানো হবে। সেই সঙ্গে অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
