নড়াইলে ভ্যানের ওপর মিলল গৃহবধুর লাশ, পালিয়ে গেলেন স্বামী
লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ০২:০২ এএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় জান্নাতি খানম অন্তু (২৪) নামে এক গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের পরিবারের দাবি, তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে ঘটনার পর ভ্যানের ওপর গৃহবধু জান্নাতির নিথর দেহ ফেলে রেখে ওই গৃহবধুর স্বামী সাজ্জাদ মোল্যা (৩৫) ও তার পরিবারের লোকজন পালিয়ে গেছেন।
সোমবার (৬ অক্টোবর) সন্ধার পর ওই গৃহবধুর শ্বশুর বাড়ি উপজেলার চর-শালনগর গ্রাম থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে লোহাগড়া থানা পুলিশ। লোহাগড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত জান্নাতি খানম অন্তু উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের চর-শালগর গ্রামের দাউদ মোল্যার ছেলে সাজ্জাদ মোল্যার স্ত্রী এবং একই ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের মিটুল মোল্যার মেয়ে।
নিহতের স্বজন সূত্রে জানা গেছে, প্রায় চার মাস আগে চর-শালনগর গ্রামের সাজ্জাদ মোল্যার সাথে রঘুনাথপুর গ্রামের জান্নাতি খানম অন্তুর বিবাহ হয়। তবে এর আগে সাজ্জাদের একটি বিয়ে হয়েছিল। তার প্রথম স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদও হয়। পুরো বিষয়টি জান্নাতির পরিবারের কাছে গোপন করে সাজ্জাদ ও তার পরিবার।
গত বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুর্গাপূজা উপলক্ষে শালনগর ইউনিয়নের শিয়েরবর মধুমতী নদীতে নৌকা বাইচ ও নদী পাড়ে মেলা দেখার উদেশ্যে ওই গৃহবধু শ্বশুর বাড়ি চর-শালনগর থেকে বাবার বাড়ি রঘুনাথপুর আসেন।
এরপর সোমবার (৬ অক্টোবর) দুপুর ১২ টার দিকে স্বামী সাজ্জাদ মোল্যা স্ত্রী ও অন্তুও শাশুড়ি অন্তুকে তার বাবার বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে দুপুর দুইটার দিকে সাজ্জাদ এর ছোট ভাই অন্তুর বড় ভাই সাব্বিরকে ফোন করে জানায় যে, অন্তু স্ট্রোক করেছে আপনারা দ্রুত লোহাগড়া হাসপাতালে চলে আসেন।
এরপরে অন্তুর বাবা লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে জামাতা সাজ্জাদ মোল্যার বাড়িতে যান, সেখানে গিয়ে একটি ভ্যানের উপর অন্তুকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এসময় নিহত অন্তুর পাশে মেয়ে জামাতাসহ মেয়ের শ্বশুর বাড়ির কোন লোকজনকে না পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পরে খবর পেয়ে রাতে লোহাগড়া থানা পুলিশের একটি দল মরদেহ উদ্ধার করে লোহাগড়া থানায় নিয়ে আসে।
রাতে লোহাগড়া থানায় নিহতের পরিবারের লোকজনের সাথে কথা হলে তারা জানান, নিহত অন্তুর গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অন্তুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সাজ্জাদ ও তার পরিবারের লোকজন পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় তাদের শাস্তির দাবি জানান তারা। এদিকে ঘটনার পর অভিযুক্ত সাজ্জাদ মোল্যা ও তার পরিবারের লোকজন পালিয়ে যাওয়ায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে লোহাগড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন, মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল জেলা হাসপাতালে পাঠানোর হচ্ছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ছাড়া নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
