প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে টেন্ডারসহ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ দুদকে
চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৫, ১০:২৩ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন টেন্ডারে স্বজনপ্রীতি, কমিশন বাণিজ্য ও ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, সারা দেশে পুকুর-খাল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ধনুসাড়া মিজির ব্রিজ থেকে সিংরাইশ ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার কানাইল খাল পুনঃখননের জন্য ২ কোটি ৪৯ লাখ ৮১ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কাজটি সম্পন্নের দায়িত্ব পায় দাউদকান্দির ‘মেসার্স লিবার্টি ট্রেডার্সথ।
কার্যাদেশ অনুযায়ী, খালের পাড় বাঁধাই ও অতিরিক্ত মাটি উন্মুক্ত টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রির কথা থাকলেও অভিযোগ উঠেছে প্রকৌশল অফিসের যোগসাজশে রাতের আঁধারে ট্রাক্টর প্রতি ২০০ টাকায় মাটি বিক্রি করা হয়। এতে স্থানীয়দের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার ঘটনাও ঘটে।
পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) চলতি বছরের ২৫ মার্চ কার্যাদেশটি বাতিল করেন। আশ্চর্যের বিষয় উপজেলা প্রকৌশলী নুরুজ্জামান একদিকে কার্যাদেশ বাতিলের সুপারিশ করলেও অপরদিকে একই প্রকল্পের চূড়ান্ত বিল পরিশোধের জন্য জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে চিঠি পাঠান। তার এই দ্বৈত আচরণে জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা কাজী ফখরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, খালের দুই পাশে ২-৩ হাজার গাছ লাগানোর কথা থাকলেও মাত্র ২০-৩০টি গাছ লাগানো হয়েছে। বাকি অর্থ প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ভাগ করে নিয়েছেন।
এছাড়া উপজেলা প্রকৌশলী নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে আরও নানা অভিযোগ রয়েছে। ২০২১ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের তহবিল, এডিবি, রাজস্বসহ বিভিন্ন খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বিতর্কিত হন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে তিনি একের পর এক প্রকল্পে অনিয়মের সুযোগ নিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. শাহজাহান বলেন, খাল খননের নামে সরকারি টাকা লুটপাট হয়েছে। এসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিচার না হলে আরও বড় অনিয়ম হবে।
আরেক বাসিন্দা ওমর ফারুক বলেন, প্রকৌশলী নুরুজ্জামান ঘুষখোর কর্মকর্তা। রাতের আঁধারে খালের মাটি বিক্রি করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান বলেন, খালের পাড়ে গাছ লাগানো হয়েছে। জেলা অফিসের প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই বিল অনুমোদিত হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন ও মিথ্যা।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জামাল হোসেন বলেন, এলজিইডি খাতের কাজ হিসেবে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
