Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশন

আ.লীগ-বিএনপি ও জামায়াত মিলে নির্বাচন

নূর ইসলাম রকি

নূর ইসলাম রকি

প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

আ.লীগ-বিএনপি ও জামায়াত মিলে নির্বাচন

কাঁচাপাট রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএ) নির্বাচন ১৮ অক্টোবর। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। বিজেএ-এর ইতিহাসে এবার রেকর্ড সংখ্যক ভোটার করার অভিযোগ উঠেছে। পাটের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নন-এমন অনেকেই এবার ভোটার হয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পদধারী নেতাদের সঙ্গে জামায়াত অনুসারী ব্যবসায়ীরাও রয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতা ও জামায়াতের অনুসারীরা একই প্যানেল হয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এছাড়া দুদকের মামলা, পাট চুরির আসামি, গোপালগঞ্জের বাসিন্দাসহ অনেকেই এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

যুগান্তরের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৬-২০২৪ সাল পর্যন্ত বিজেএ-এর চেয়ারম্যান ছিলেন দৌলতপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ সৈয়দ আলী। স্থানীয় সংসদ-সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ছিলেন। এরপর আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ-সদস্য জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাক আকন্দের ছেলে ফরহাদ আকন্দ পম্পি বিজেএ’র চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বিজেএ-এর অর্ডিনারি ও অ্যাসোসিয়েট ভোটাররা সাধারণ ভোটারদের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পর তারা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন।

এবার বগুড়ার দক্ষিণ চেলোপাড়া গ্রামের বাসিন্দা টিপু সুলতান বিজেএ-এর চেয়ারম্যান প্রার্থীর টার্গেটকে লক্ষ্য করে অনেক ভোটার তৈরি করেছেন। দৌলতপুর এলাকার একাধিক ব্যবসায়ী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এদিকে টিপু সুলতানের প্রতিপক্ষ হিসাবে স্থানীয় বিএনপির সমর্থক খন্দকার আলমগীর কবিরও পালটা ভোটার তৈরি করেছেন। যার ফলে গত নির্বাচনে বিজেএ-এর মোট ভোটার ২১৯ জন থাকলে এবার ভোটার হয়েছেন ৮০০ জন। যুগান্তর প্রতিনিধি একাধিক ভোটারের সঙ্গে আলাপকালে তারা টিপু সুলতান ও খন্দকার আলমগীরের মাধ্যমে ভোটার হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে যথাযথ কাগজপত্র দিয়ে সবাই ভোটার হলেও অনেক ভোটারেরই পাটের ব্যবসা বা পাট সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই।

মঙ্গলবার দৌলতপুর ও নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীদের সমঝোতার কারণে অ্যাসোসিয়েট গ্রুপের প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় ছয়টি পদে ব্যবসায়ীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। দৌলতপুরের চারজন এবং নারায়ণগঞ্জের দুজন মিলে এই সমঝোতা করেন। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতরা হলেন তোফাজ্জেল হোসেন, মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া, নূর ইসলাম, আলমগীর খান, রঞ্জন কুমার দাস ও এসএম সাইফুল ইসলাম।

তবে অর্ডিনারি গ্রুপের ২৫ জন প্রার্থী একাধিকবার সমঝোতা করার চেষ্টা করলেও তারা সফল হননি। বরং টিপু সুলতান ও খন্দকার আলমগীর মিলে একটি প্যানেল দিয়েছেন। এই প্যানেলে প্রার্থীদের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমান বিজেএ-এর চেয়ারম্যান ফরহাদ আকন্দ পম্পি, দুদকের মামলার আসামি টিপু সুলতান, পাট চুরি মামলার আসামি খন্দকার আলমগীর কবির, আওয়ামী লীগ নেতা শামীম আহমেদ এবং দৌলতপুর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন রয়েছেন। তাদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন খুলনা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানের এপিএস এফএম সাইফুজ্জামান মুকুল, গোপালগঞ্জের বাসিন্দা মাহমুদুর রহমান, খুলনা-৩ আসনে জামায়াতের সংসদ-সদস্য প্রার্থী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের আস্থাভাজন গাজী শরীফুল ইসলাম। এ বিষয়ে দৌলতপুর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন যুগান্তরকে বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুজ্জামান মুকুল বেশ কয়েকটি মামলার আসামি। তিনি ঢাকা থেকে মনোনয়ন কিনেছেন। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি আত্মগোপনে। বিষয়টি আমি পরে জেনেছি। তিনি দাবি করেন, তার প্যানেলে যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে মামলার আসামি নেই। খন্দকারের মামলাটি ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে হয়েছিল। এটা নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। জামায়াতপন্থি নেতা গাজী শরীফুল ইসলাম যুগান্তরকে জানান, মুকুল তাদের প্যানেলে রয়েছে। এটা ব্যবসায়িক সংগঠন। সবাইকে নিয়ে মিলেমিশে এগিয়ে যেতে হয়। তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনে অনেক ভোটার তৈরি করা হয়েছে-যারা এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত নয়। একটি পক্ষ বিজেএকে নিয়ন্ত্রণের জন্য এগুলো করেছেন। এরপরও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক-এটা প্রত্যাশা করি।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম