Logo
Logo
×

সারাদেশ

ইমাম দম্পতিকে রাতভর নির্যাতন-শ্লীলতাহানি

Icon

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৫৪ পিএম

ইমাম দম্পতিকে রাতভর নির্যাতন-শ্লীলতাহানি

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় মসজিদের ইমাম দম্পতিকে রাতভর নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় এক অভিযুক্ত সৈয়দ মিস্ত্রীর ছেলে মো. রুবেলকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

অন্য অভিযুক্তরা হলেন- মো. জলিলের ছেলে মো. জহিরুল (২৭) ও আ. সাত্তার মেম্বারের ছেলে মো. পলাশ (২৬)। অভিযুক্ত সবাই উপজেলার সুতিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকালে এ ঘটনায় মামলা দায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেন দুর্গাপুর থানার ওসি মো. মাহামুদুল হাসান। তিনি বলেন, একজনকে গ্রেফতার করে ইতোমধ্যে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি চেষ্টা অব্যাহত আছে।

এর আগে গত ১ অক্টোবর দিনগত রাত ২টা থেকে পরের দিন ভোর সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ভুক্তভোগী ইমাম দম্পতি নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির শিকার হন।

ভুক্তভোগীরা হলেন- আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৮) ও তার স্ত্রী (২৬)। আব্দুল্লাহ আল মামুন জেলার পূর্বধলা উপজেলার খারছাইল গ্রামের মনির উদ্দিনের ছেলে এবং দুর্গাপুরের সুতিয়াপাড়া নূরানি ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক এবং সুতিয়াপাড়া মসজিদের ইমাম ও খতিব।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী আব্দুল্লাহ আল মামুন পাঁচ মাস পূর্বে সুতিয়াপাড়া নূরানি ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক এবং সুতিয়াপাড়া মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। গত ছয়-সাত দিন পূর্বে মাদ্রাসা ও মসজিদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কমিটির অন্যান্য লোকজনের অনুমতিসাপেক্ষে ভুক্তভোগী তার স্ত্রীকে নিয়ে আসার অনুমতি পান এবং মাদ্রাসার পার্শ্বে পৃথকভাবে টিনশেড ঘর তৈরি করেন।

গত ১ অক্টোবর বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ভুক্তভোগী তার স্ত্রীকে বাড়ি হতে মাদ্রাসায় নিয়ে আসেন। ক্যাশিয়ার তার নিজ বাড়ি হতে তাদের জন্য ওই দিন রাতের খাবার পাঠান। রাতের খাবার শেষে ভুক্তভোগী তার স্ত্রীকে নিয়ে মাদ্রাসার একটি কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। দুই দিন বন্ধ থাকায় মাদ্রাসায় শুধুমাত্র দুজন ছাত্র ছিল। তারা মাদ্রাসার ফ্লোরে বিছানা পেতে ঘুমিয়ে পড়ে।

পরে রাত অনুমান ২টার দিকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা মোটরসাইকেলযোগে মাদ্রাসা এসে নাম ধরে ডাকাডাকি করতে থাকেন। ঘুম হতে জাগ্রত হয়ে মাদ্রাসার দরজা খুললে ভুক্তভোগী অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন এবং দরজা খোলামাত্র অভিযুক্তরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে অনধিকারভাবে মাদ্রাসার কক্ষে প্রবেশ করে এবং স্ত্রীকে দেখে ভুক্তভোগীর ওপর রাগান্বিত হয়।

১৫ হাজার টাকা দাবি চাঁদা দাবি করে এবং এলোপাতাড়ি কিল-ঘুসি মেরে ভুক্তভোগীর শরীরের নানাস্থানে ফোলা জখম করে এবং অভিযুক্ত মো. পলাশ ভুক্তভোগীর স্ত্রীর পরনের কাপড় ধরে টানাহেঁচড়া করে শ্লীলতাহানি ঘটায়। এতে বাধা দিলে অভিযুক্তরা মারপিট করে ভুক্তভোগীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি নিয়ে যায় এবং মোবাইল দিয়ে ভুক্তভোগী দম্পতিকে নানারকম প্রশ্ন ও ভিডিও ধারণ করে।

একপর্যায়ে অভিযুক্ত মো. পলাশ মাদ্রাসায় ঘুমন্ত দুজন ছাত্রকে ডাক দিয়ে তুলে এবং নাম ও পরিচয় জিজ্ঞাসা করে একজন ছাত্রের গালে চড়-থাপ্পড় মারে। অভিযুক্তরা মাদ্রাসায় অনুমান চার ঘণ্টার বেশি সময় অবস্থান করে ভোর সাড়ে ৬টার দিকে ওই দম্পতিকে নানারকম হুমকি দেয় এবং এ বিষয়ে কারো কাছে বিচার কিংবা মামলা মোকদ্দমা করলে ভুক্তভোগী ও তার স্ত্রীকে খুন করার হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে সকালের দিকে মাদ্রাসার আশপাশের লোকজন এলে তাদের সহযোগিতায় ভুক্তভোগী স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম