পারাপারে দ্বিগুণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে ইজারাদার, রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার
কুতুবদিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০:২৪ এএম
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় বড়ঘোপ টার্মিনাল জেটি ঘাট পারপারে ইজারার নামে পারাপারের যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নিয়োগকৃত ইজারাদার অলি উল্লাহ মিন্টুর বিরুদ্ধে।
নিয়ম রয়েছে যাত্রীদের উঠানামার ক্ষেত্রে একবার অর্থ আদায় করতে পারবে, কিন্তু ইজারাদার তা না মেনে নিয়মবহির্ভূত দ্বিগুণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। স্থানীয়রা বলছেন, আমরা যতটুকু জানি বড়ঘোপ টার্মিনাল জেটি ঘাটের টেন্ডার আহ্বান করা হলেও বিআইডব্লিউটিএ এবং অলি উল্লাহ মিন্টুর যোগসাজশে পূর্বের সিডিউল মূল্য থেকে কম মূল্যে তাকে ইজারাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে চলতি বছরে সরকার মোটা অংকের রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় বড়ঘোপ টার্মিনাল জেটি পারাপার ঘাট প্রতি বছর বিআইডব্লিউটিএ এর তত্ত্বাবধানে ইজারাদার নিয়োগের জন্য টেন্ডার আহবান করা হয়। চলতি বছরে নামমাত্র টেন্ডার আহ্বান করা হয়। টেন্ডারের সিডিউল মূল্য ছিলো ১ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা। বিআইডব্লিউটিএ তাদের ব্যক্তিগত পছন্দের লোক অলি উল্লাহ মিন্টুকে সিডিউল মূল্যের চেয়ে প্রায় ৫০ লাখ কম মূল্যে ইজারাদার নিয়োগ দেন। এ কারণে সরকার চলতি বছরে এ ঘাটে এককালীন প্রায় ৫০ লাখ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে। এ ঘাটে টাকা উত্তোলন করছেন অলি উল্লাহ মিন্টুর লোকজনের মাধ্যমে। প্রতিদিন যে পরিমাণ টাকা উত্তোলন হচ্ছে তার সিংহভাগ অর্থ যাত্রীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন।
পারপারের কয়েকজন যাত্রীদের কাছ থেকে জানতে চাইলে তারা বলেন, আমাদের সারা বছর আসা-যাওয়া করতে দুই বারই টাকা গুনতে হয়। নিয়ম যে একবার নেওয়ার, তা আমরা জানি না।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতি বছর বাংলা সনের শুরুতে টেন্ডার পক্রিয়ার মাধ্যমে বড়ঘোপ টার্মিনাল জেটি ঘাট থেকে সরকারি কোষাগারে প্রায় দেড় কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করা হতো। কিন্তু চলতি বছরে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের পছন্দের লোককে খুব কম মূল্যে ইজারাদার নিয়োগ দিয়ে সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করছেন। এসব দেখার যেন কেউ নাই।
আবার সংশ্লিষ্ট অনেকেই বলেন, এ ঘাটে ইজারাদার নামমাত্র রয়েছে। বর্তমানে ঘাট চলছে খাস কালেকশনে। এ বিষয়ে ইজারাদার এবং বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের তথ্য দেওয়ার মধ্যে অনেকটা ভিন্নতাও পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইজারাদার অলি উল্লাহ মিন্টু যুগান্তরকে বলেন, ভ্যাটসহ এক কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা দিয়ে এ ঘাট ইজারা নিয়েছি। যাত্রীদের থেকে টাকা তো একবার নেওয়ার নিয়ম দুইবার কেন নেওয়া হয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুইবার নেবার নিয়ম রয়েছে, তাই নেওয়া হচ্ছে। তবে তিনি ইজারাদার নিয়োগের বৈধ কাগজ পত্র এ প্রতিবেদককে দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সহকারী পরিচালক নয়ন শীল যুগান্তরকে বলেন, এ ঘাট অলি উল্লাহ মিন্টু ইজারা পেয়েছেন। ভ্যাট ছাড়া মূল ডাক ছিলো ৮০ লক্ষ টাকা সাথে ২৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ হবে। পারপারে যাত্রীদের থেকে কয়বার টাকা নেওয়ার নিয়ম রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিয়ম একবার, যদি দুইবার নেওয়া হয় তাহলে আমরা ব্যবস্থা নিবো।
এ ব্যাপরে জানতে কুতুবদিয়া ইউএনও ক্যথোয়াইপ্রু মারমার মোবাইলে একাধিকবার কল দেওয়া হয়েছে। তিনি কল না ধরায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

