Logo
Logo
×

সারাদেশ

ইলিশে সয়লাব রাজবাড়ীর বাজার, আকাশচুম্বী দামে হতাশ ক্রেতা

Icon

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৪৬ পিএম

ইলিশে সয়লাব রাজবাড়ীর বাজার, আকাশচুম্বী দামে হতাশ ক্রেতা

রাজবাড়ীর বিভিন্ন মাছের বাজারে আসতে শুরু করেছে ইলিশ। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় আবারও ইলিশ মাছ বেচাকেনায় সরগরম হয়ে উঠেছে রাজবাড়ীর বাজারগুলো। তবে দাম এখনো আকাশচুম্বী। এতে হতাশ ক্রেতারা।

মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, পদ্মা ও যমুনা নদীতে ইলিশ মাছ কম পাওয়া যাওয়ায় বেশি দামে এই মাছ বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।

মৎস্য সমিতির কয়েকজন নেতা জানান, সামনে ইলিশের আমদানি বাড়লে দাম অনেকটাই কমে যাবে।

রোববার ভোরে দৌলতদিয়া বাজার, গোয়ালন্দ বাজার, পৌর জামতলা বাজার ঘুরে সরেজমিন দেখা গেছে, ইলিশ আহরণ ও বেচাকেনাকে ঘিরে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের বড়-ছোট সব মাছের বাজারে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। তুলনামূলক বড় ইলিশ পাওয়া না গেলেও নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার প্রথম দিনেই ছোট ও মাঝারি সাইজের ইলিশে সয়লাব বাজার। মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর থেকে পদ্মায় জাল ফেলে বেশি সময় কাটাচ্ছেন জেলেরা।

দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের দৌলতদিয়া প্রান্তের মাছ বাজারের সবচেয়ে বড় ইলিশ বেচাকেনার স্থান। মাছ ব্যবসায়ী সম্রাট শাহজাহান শেখ বলেন, ইলিশ কম পাওয়া যাচ্ছে। যে কারণে ছোট সাইজের ইলিশ প্রতি হালি (২০০ গ্রাম ওজন) বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায়। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম বা এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫শ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা দরে।

দৌলতদিয়া মাছ বাজারে ইলিশ মাছ কিনতে আসা ক্রেতা বাবু সেখ বলেন, নদীতে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিলেই হবে না, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করতে হবে। এর মাধ্যমে ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে। নিষেধাজ্ঞার আগে এক কেজি ওজনের ইলিশ ২০০০ থেকে ২২০০ টাকা দিয়ে কিনলেও এখন সেই একই ওজনের মাছ ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে।

জেলে বাসুদেব সরকার বলেন, পদ্মা নদীর ইলিশের সাইজ ছোট। তাই পদ্মা নদীতে নৌকা নিয়ে বেশি সময় কাটালাম। কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাইনি। তিন হালি ইলিশ পেয়েছি যা মাঝারি আকারের। এই মাছ বিক্রি করে নৌকার তেল খরচ উঠাতে কষ্ট হয়ে যাবে।

মাছ বাজারের আড়তদার বলেন, ইলিশের নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিতে নদী খননের পরামর্শ রইল। নদীতে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলা বন্ধেও কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন। তাহলে সাগরের ইলিশ নদীতে আসবে। তখন ইলিশের আমদানি বাড়বে এবং দাম কমবে।

অনলাইনে ইলিশ বিক্রেতা মো. চান্দু মোল্লা বলেন, ইলিশের কিছু অর্ডার পেয়েছিলাম। নিষেধাজ্ঞায় দিতে পারিনি। এখন আশা করছি, সব অর্ডার ডেলিভারি দিতে পারব। পূর্বের মতোই ইলিশের দাম উঠানামা শুরু হয়েছে।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুব-উল হক যুগান্তরকে বলেন, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সফলভাবে বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন, মৎস্য অধিদপ্তর, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন সমন্বিতভাবে নদীতে কাজ করেছে। জেলে ও মৎস্যজীবীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছি। এমনকি নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের জন্য ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় খাদ্য সহায়তাও দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, জেলেরা বড় সাইজের ইলিশ নদীতে পাবেন। ইলিশের দাম ক্রেতাদের নাগালে রাখতে আমরা বাজারগুলোতে নজরদারি রাখব।

উল্লেখ্য, মা ইলিশের বাধাহীন প্রজননের জন্য ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সাগর ও নদীতে মাছ ধরায়  নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল সরকার।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম